বিদেশে চাকরির স্বপ্ন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন শফিকুল

11

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদেশে গিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে আবু আলম নিজের সব সম্বল তুলে দেন আদম বেপারির হাতে। নগরীর বাকলিয়া এলাকার বাসিন্দা আবু আলম এখন নিজেই অসহায়। সব উপার্জন হারিয়ে এখন তাকে ঘুরতে হচ্ছে পথে পথে। শুধু আলম নন, অনেক জনের কাছ থেকে বিদেশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন আদম বেপারি শফিকুল ইসলাম।
বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিদেশের ভিসা দেওয়ার নাম বলে শফিকুল ইসলাম আত্মসাত করেছেন বিপুল টাকা। কুমিল্লার হোমনা থানার মাধবপুর গ্রামের মৃত এনু মিয়া মোল্লার পুত্র আদম বেপারি শফিকুল ইসলাম। নগরীর ডবলমুরিং থানার মোগলটুলী এলাকার হোটেল মাওলা আবাসিক এ অফিস খুলে চালাতেন প্রতারণা। অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেনের ভাই পরিচয় দিয়ে প্রতারণা চালাতেন তিনি। আজারবাইজানসহ বিভিন্ন দেশে উচ্চ বেতনের চাকরির অফার দিতেন। বিশ্বাস বাড়াতে নিজের আত্মীয়-স্বজনদেরও ব্যবহার করতেন তিনি।
শফিকুল ইসলামের কাছে প্রতারণার শিকার হয়ে আদালতে মামলা (৬৩৭/২৪) দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী আবু আলম। আদালত ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন।
আবু আলম বলেন, আমার একটি প্রিন্টিংপ্রেস ছিল। আদম বেপারি শফিকুল ইসলামের এক আত্মীয়ের মাধ্যমে তার সাথে পরিচয় হয়। আজারবাইজানে উচ্চ বেতনে চাকরির অফার দেন তিনি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দিয়ে আমি বিভিন্ন সময়ে তাকে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়েছি। এখন আমাকে পথে পথে ঘুরতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমি ৯ জনকে পেয়েছি, যাদের সাথে সে একই ধরনের প্রতারণা করেছে। সে বিভিন্ন জায়গায় শত শত মানুষের সাথে এমন প্রতারণা করতে পারে। আমি আদালতে মামলা করেছি। আশা করি, পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিবে।একই ব্যক্তির কাছে প্রতারণার শিকার হওয়া মো. কামাল উদ্দিন জানান, শফিকুল ইসলামকে তিনি আড়াই লাখ টাকা দিয়েছেন। জাল ভিসা দিয়ে শফিকুল তার সাথে প্রতারণা করেছেন।
ভুক্তভোগীদের মতে, আজরবাইজানে হোটেল-রেস্টুরেন্টের ভিসার অফার দিতেন শফিকুল। ৮ ঘণ্টা চাকরির মাধ্যমে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করার সুযোগ থাকার কথা জানাতেন। উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভনে পড়ে নিজেদের সম্বলটুকু তুলে দেন শফিকুলের হাতে। ধাপে ধাপে টাকা দিলেও শেষ সময়ে এসে প্রত্যেকে বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার। কেউ ভিসা পাওয়ার পর বুঝতে পারেন সেটা ভুয়া ভিসা। শফিকুল চাকরি প্রার্থীদের প্রতারণা করে হাতিয়ে নেন বিপুল অর্থ। এক সময় শফিকুল নিজেই গা ঢাকা দেন। বন্ধ করে দেন নিজের মোবাইল ফোনও।