বিআরটিএ’র সার্ভার বন্ধ, স্থবির পরিবহনের যাবতীয় কাজ

24

মনিরুল ইসলাম মুন্না

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) বিএসপি (বাংলাদেশ সার্ভিস পোর্টাল) ওয়েবসাইট বন্ধ থাকায় পরিবহন সংক্রান্ত অনলাইনের যাবতীয় কাজ বন্ধ রয়েছে । এসব কর্মকর্তারা কার্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও গ্রাহকরা কোনো কাজ করতে পারছে না।
গতকাল মঙ্গলবার বিআরটিএ কার্যালয় ও গ্রাহকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়। তবে বিআরটিএ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী সপ্তাহের শুরুতে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
তাছাড়া সার্ভার বন্ধ থাকায় বিভিন্ন সেবার মেয়াদ উত্তীর্ণ কাগজপত্রের বৈধতা বাড়িয়েছে সংস্থাটি। ফলে গ্রাহকরা গাড়ির ফিটনেস, ট্যাক্স-টোকেন, রুট পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন ছাড়াই দেড় মাস ব্যবহারের সময় পাচ্ছেন। গত ৩১ জুলাই বিআরটিএর সংস্থাপন শাখার সহকারী সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ১৮ ও ১৯ জুলাই দুষ্কৃতিকারীরা বিআরটিএর বনানীর প্রধান কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটতরাজ করে। ফলে বিআরটিএ ভবনে স্থাপিত সার্ভার ও আইএস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে বিআরটিএর মোটরযান সংক্রান্ত সেবা যথা: ফিটনেস, ট্যাক্স-টোকেন, রুট পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন বা হালনাগাদ, অগ্রিম আয়কর আদায় এবং গাড়ি নিবন্ধন করা সম্ভব হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত সার্ভার ও আইএস সচল ও কার্যকর করার কার্যক্রম চলমান আছে।
আরও বলা হয়, এমন প্রেক্ষাপটে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ধারা ১২৪(১)(থ) অনুযায়ী ১৬ জুলাই থেকে যেসব গ্রাহকের মোটরযানের ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, অগ্রিম আয়কর, রুট পারমিট এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন সংক্রান্ত কাগজপত্রের মেয়াদ ১৯ জুলাই পার হয়েছে, অথবা আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পার হবে, সেসব গ্রাহকের মোটরযানের উল্লিখিত সেবা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রের বৈধতার মেয়াদ আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
তবে এরই মধ্যে যেসব লাইসেন্সপ্রার্থীর ড্রাইভিং কম্পিটেন্সি পরীক্ষা ছিল, তা পরবর্তী তারিখ দিয়ে ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা।
লাইসেন্স প্রার্থী বর্ণালী বড়–য়া পূর্বদেশকে বলেন, গত সোমবার আমার ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষা ছিল। কিন্তু সার্ভার বন্ধের কারণে নাকি পরীক্ষা স্থগিত আছে। জানি না কবে পরীক্ষা হবে। তবে আমার মতো অনেক প্রার্থীর পরীক্ষা দিতে পারেনি। ফলে আবারও লাইসেন্স পেতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, দ্রæত সময়ে আমাদের পরীক্ষা এবং লাইসেন্স যেন সরবরাহ করা হয়। অনেকে লাইসেন্সের কারণে দেশের বাইরে যেতে পারছে না। আবার অনেকে চাকরিতে লাইসেন্স দেখাতে পারছে না বলে নিয়োগ হচ্ছে না। এজন্য এসব বিষয় বিবেচনা করে যেন দ্রæত লাইসেন্স প্রদান করা হয়।
তবে কর্মকর্তারা বলছেন, সার্ভারের সমস্যার সমাধানে কাজ চলমান আছে জানিয়ে বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক (ইঞ্জি.) সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী পূর্বদেশকে বলেন, বিআরটিএ’র বনানীর প্রধান কার্যালয়ে দুষ্কৃতিকারীরা অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটতরাজ করে। ফলে বিআরটিএ ভবনে স্থাপিত সার্ভার ও আইএস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের টেকনিক্যাল টিম সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে আশাকরি সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। গ্রাহক ও সেবাপ্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, আপনারা বিচলিত না হয়ে একটু ধৈর্য ধরুন। সার্ভার ঠিক হলে যথাসময়ে সব কাজ সম্পাদন করা হবে।