বান্দরবানে শুকিয়ে গেছে পাহাড়ি ঝিরি-ঝর্ণা পানি সংকট তীব্র

7

মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান

বান্দরবানে পাহাড়ি ঝিরি ঝর্ণার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অপরিকল্পিত জুম চাষ, নির্বিচারে বৃক্ষনিধন ও ঝিরি-ঝর্ণা থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন পানি সংকটের মূল কারণ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন পাহাড়ে বসবাসকারী বিশাল জনগোষ্ঠির। বিশুদ্ধ পানির অভাবে নদী ও ঝিরির দূষিত পানি পান করে জীবন ধারণ করছেন দুর্গম এলাকার প্রায় কয়েক হাজার বাসিন্দা। এতে করে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা।
ঝিড়ি-ঝর্ণা থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের কারণে দূর্গম বিভিন্ন এলাকায় তীব্র পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন এলাকাবাসী। বান্দরবান সদর উপজেলার রেইছা এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম জানান, তীব্র তাপদাহের কারণে এবং ঝিরি-ঝর্ণাগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পানির এই সংকট দেখা দেয়। শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ের দূর্গম এলাকায় ঝিরির গর্তে জমে থাকা পানি সেখানকার অধিবাসীদের পানি সংগ্রহের একমাত্র উৎস।
সুয়ালক ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ জানান, ঝিরি-ঝর্ণায় ছোট ছোট পাত কুয়া সৃষ্টি করে পানি সংগ্রহ করেন এলাকাবাসী। সরকারি-বেসরকারিভাবে স্থাপনকৃত রিংওয়েল, টিউবওয়েল ও জিএফএস লাইনগুলোও অকেজোঁ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাই পাহাড়ে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, অপরিকল্পিত জুম চাষ, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ও ঝিরি-ঝর্ণা থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন পানি সংকটের মূল কারণ। দিন দিন এই পানির সঙ্কট আরো প্রকট আকার ধারণ করবে এবং পাহাড়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ না করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ব্যাপক ক্ষতির আশংকাও রয়েছে।
বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাহাড়ে ঝিরিগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানির লেয়ার মাটির অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় রিং ওয়েল ও গভীর নলকূপেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি জানান, বান্দরবান জেলায় সুপেয় পানির সংকট নিরসনে বান্দরবান ও লামা পৌরসভায় এডিবির অর্থায়নে দু’টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আরও দু’টি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো অনুমোদন পেলে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় সুপেয় পানির সংকট কমে যাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।