বান্দরবানে ভারীবর্ষণে প্লাবিত নিম্নাঞ্চল, পাহাড়ধসের শঙ্কা

2

মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান

বান্দরবানে ভারীবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে খাল-ছড়ার পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় দেখা দিয়েছে পাহাড়ধসের শঙ্কা। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষে মাইকিং করা হচ্ছে। দেখা গেছে, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা শহরে সাংগু নদীর তীরবর্তী ইসলামপুর, আর্মিপাড়া, শেরেবাংলা নগর, মেম্বারপাড়াসহ নীচু এলাকাসমূহ প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে পাহাড়ি ঢল ও নাফ নদীর উপশাখার পানিবৃদ্ধি পেয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতির শিকার হয়েছে দুই শতাধিক পরিবার। পাহাড়ি ঢলে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রবল বর্ষণে পাহাড়ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরে যেতে জেলা-উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, মিয়ানমারের ভেতর ক্রোকোডিংগা, বড়খাল, মুরুংগা খালসহ ফকিরা বাজারের সমস্ত পাহাড়ি ঢলের পানি ঘুমধুম সীমান্তখাল দিয়ে আসায় ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী মধ্যম পাড়া, কেনারপাড়া, বাজারপাড়া, হিন্দুপাড়া, পশ্চিমকূল, ক্যাম্পপাড়ার বাড়িঘর ও কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কয়েকটি পাড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে তুমব্রæ বাজারে দোকানপাট ডুবে থাকায় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানির সাথে বালি এসে অনেক কৃষি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ঘুমধুম ইউনিয়নে অনেক পাকা রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বলেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের যাচাই-বাছাই করতে ভাইস চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনকে সভাপতি ও উপজেলা প্রকৌশলীকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সরেজমিন ক্ষতির পরিমাণ দেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রুমায় পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাতে এখন পানিবন্দী অনেক পরিবার। তাদেরকে আশ্রয় দিতে রুমা উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নে ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, দুর্যোগকালে সাধারণ মানুষকে জরুরি তথ্য ও সেবা দিতে ‘হেল্প ডেস্ক’ খোলা হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান করা পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যেতে মাইকিং করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সাতটি উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন তাদেরকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় জেলার বিভিন্নস্থানে পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে নিরাপদে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষে মাইকিং করা হচ্ছে।