বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি

3

মনিরুল ইসলাম মুন্না

দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েক দিনের বৃষ্টি, কয়েকটি সবজির মৌসুম শেষের দিকে এবং বাজারে সরবরাহ কমসহ নানা অজুহাতে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। বাজারে করলা-বেগুন প্রতিকেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্য সব সবজির দামও গত সপ্তাহের তুলনায় বাড়তি।
গতকাল নগরীর রিয়াজউদ্দিন ঘুরে সবজির দামের এমন ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। এতে করে সাধারণ ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, প্রতিকেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতিকেজি ২৪০ টাকা, প্রতিকেজি কচু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, কাকরোল প্রতিকেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতিকেজি ১০০ টাকা, ধুন্দল প্রতিকেজি ৬০ টাকা, বরবটি প্রতিকেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতিকেজি ৫০ টাকা, বেগুন প্রতিকেজি ১০০ টাকা, পটল প্রতিকেজি ৫০ টাকা, কচুর লতি প্রতিকেজি ৮০ টাকা, কলা প্রতি হালি ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা প্রতিকেজি ৬০ টাকা এবং লাউ প্রতিটি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আতাউল্লাহ কায়সার বলেন, বাজারে করলা, বেগুন প্রতিকেজি ১০০ টাকা। বাকি সবজিগুলোরও বাড়তি দাম। বলতে গেলে ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই।
আরেক ক্রেতা আজমির হোসেন বলেন, আগে বাজারে এলে সবজি অন্তত এক কেজি করে কিনতাম। কিন্তু আজ দাম বাড়তি থাকায় বাধ্য হয়ে আধা কেজি করে কিনলাম। বিক্রেতারা বলছেন সরবরাহ কম তাই দাম বেশি। তাই বলে সব সবজির দাম এত বাড়তি থাকবে? এটা মেনে নেওয়া যায় না।
সবজি বিক্রেতা আলি মিয়া বলেন, পাইকারিতে সব সবজিই বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। যে কারণে খুচরায় দাম বেশি। আসলে কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে সবজি এসেছে কম। এছাড়া অনেক সবজির মৌসুমও শেষ। নতুন সবজি বাজারে ওঠার আগ পর্যন্ত দাম কিছুটা বাড়তি থাকবে। সব মিলিয়ে বাজারে সবজি সরবরাহ তুলনামূলক কম। সে কারণে দাম বাড়তি।
বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহে ৭৫০ টাকার মধ্যেই ছিল। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। এদিকে, প্রতিকজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। দেশি মুরগি ৭০০-৭৩০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায় এবং প্রতিকেজি সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়।
গরুর মাংস বিক্রেতা কাদের বলেন, কোরবানির ঈদে প্রচুর গরু বিক্রি হয়েছে। যে কারণে এখন খামারিরা গরু কম ছাড়ছে। যেগুলোও বিক্রি হচ্ছে তার দাম তুলনামূলক বেশি। তাই মাংসের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, গরুর মাংস ৮০০ টাকার মধ্যেই আটকে গেছে। আর কমবে বলে মনে হয় না। এ দামে বিক্রি করতে পারলে আমাদেরও কিছু লাভ থাকে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য পণ্যের তুলনায় মাছের বাজারে কিছুটা স্বস্তি মিলছে। বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়, যেখানে গত সপ্তাহেও ছিল ৭০০ টাকা পর্যন্ত। শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। এছাড়া পাঙাস ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কার্প মাছ ২৬০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ টাকা, মলা মাছ ২৮০, কই ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে পাবদা মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে যেখানে পাবদা মাছ ছিল ৩৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা। গতকাল বিক্রি হয় ৪৬০ টাকায়।
মো. শাহাদাত হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় আজকের বাজারে মুরগি ও মাছের দাম কিছুটা কম। তবে গরুর মাংসটা আগের মতোই বাড়তি। মুরগির দাম কম থাকায় আমারা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি।
ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন পূর্বদেশকে বলেন, নি¤œআয়ের মানুষদের পাতে ভাল খাবার উঠতে দিচ্ছে না সিন্ডিকেট। কিছুদিন পর পর অজুহাত তৈরি করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। প্রশাসনের উচিত দ্রæত এসব সিন্ডিকেটকে শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়া।