বাঁশখালী রণক্ষেত্র

138

বাঁশখালীর চাম্বলে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর নির্বাচনী সভায় হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর লোকজন। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে। জাপা প্রার্থীর পক্ষ থেকে এ ঘটনায় কমপক্ষে শতাধিক আহত হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে চমেক হাসপাতালে ১৩ জন ও বাঁশখালী হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ ৮জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে হামলার ঘটনায় বিকাল সাড়ে ৪টার পর থেকে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি সন্ধ্যার দিকে জাপা প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর সমর্থকরা বৈলছড়ি এলাকায় রাস্তা অবরোধ করলে গন্তব্যগামী মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঘটনার আগে ও পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি বিজিবিও টহলে ছিল।
ঘটনার বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল হোসেন ব্যস্ত আছেন বলে লাইন কেটে দেন। সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) মফিজ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটু ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। বৈলছড়িতে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে আছে।
স্থানীয়রা জানান, চাম্বল ইউনিয়নে জাপা প্রার্থীর পূর্ব নির্ধারিত নির্বাচনী সভা ছিল। সভাকে কেন্দ্র করে চাম্বলসহ আশপাশের ইউনিয়ন থেকে মানুষ জড়ো হয়। পাশাপাশি বৈলছড়ি ইউনিয়ন থেকে ট্রাকযোগে সভাস্থলে যায় জাপা প্রার্থীর সমর্থকরা। এসময় পথিমধ্যে সিকদার দোকান এলাকায় হামলার শিকার হয় মিছিলে থাকা সমর্থকরা। পরে চাম্বল বাজারে সমাবেশ শুরু হলে সেখানেও হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। চাম্বল এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দে চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিলে যাওয়া লোকজন। হামলার এক পর্যায়ে জাপা প্রার্থীর ব্যবহৃত গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাঁশখালী হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত কয়েকজনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এরা হলেন-কফিল উদ্দিন (৪০), মো. মামুন (২৩), সিরাজ মিয়া (৬০), আব্দুর রশিদ (৩২), মো. আমিন (২৫) ও মো. ছাবের (৪০), রমিজ উদ্দিন (৩২)। এরমধ্যে কফিল, সিরাজ ও রমিজকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর নির্বাচন সমন্বয়কারী তারেকুল ইসলাম চৌধুরী পূর্বদেশকে বলেন, ‘চাম্বলের সমাবেশের পর বৈলছড়ির নিজ বাড়িতেও গুলি চালানো হয়েছে। দুই ঘটনায় কমপক্ষে শতাধিক আহত হয়েছে। এরমধ্যে দুটি অ্যাম্বুলেন্স ও দুটি হাইচযোগে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ৩০-৪০জন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে আমাদের প্রার্থী অক্ষত আছেন। প্রতিপক্ষ প্রার্থীর লোকজন হামলায় জড়িত থাকার কথা জানালেও কোন প্রার্থীর লোকজন হামলা চালিয়েছেন এ বিষয়ে নিশ্চিত করেননি তিনি।’ তিনি বলেন, ‘রাজনীতির মতাদর্শে ভিন্নতা থাকতে পারে। নির্বাচনী মাঠে অল্পসল্প ঝামেলাও হয়। কিন্তু এভাবে অস্ত্রবাজি কখনো কাম্য নয়।’
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌরসভার অলি মিয়ার দোকান এলাকায় মো. ইউসুফ নামে এক ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ইউসুফ পৌরসভার নোয়া পাড়া এলাকার মৃত নুর হোসেনের পুত্র।
তার স্বজনরা জানান, বিএনপি প্রার্থী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ার সময় ইউসুফ প্রতিবাদ করলে তাকে গুলি করা হয়। ইউসুফ পৌরসভা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক। তার উরুতে ১০-১২টি ছররা গুলি করা হয়েছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।