বন্ধুরাষ্ট্রের কাছে ‘কথিত’ এমপিরাও নিরাপদ নয়

4

ভারতে গিয়ে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের নিখোঁজ হওয়া এবং সরকারের পক্ষ থেকে তার খুন হওয়ার তথ্য প্রকাশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শুধু দেশের সাধারণ নাগরিক নয়, আওয়ামী লীগের ‘কথিত’ সংসদ সদস্যরাও সরকারের বন্ধুরাষ্ট্রের (ভারত) কাছে নিরাপদ নয়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ‘কথিত’ একজন সংসদ সদস্য বিদেশে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেলেন। তার কোনো খবর দিতে পারলেন না তারা। না পারল বাংলাদেশ সরকার, না পারল তাদের বন্ধুরাষ্ট্র ভারত। তাহলে আমরা কী মনে করব? দুর্নীতি করা, বিদেশের মাটিতে টাকার পাহাড় তৈরি করা, এটাই ঘটনা কিনা আমরা জানি না।
গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপরে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় সরকারকেই দায়ী করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সেনাবাহিনীকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করার জন্য এই ঘটনাটা ঘটেছে।
তিনি বলেন, দেখুন কত বড় লজ্জার কথা। সাবেক সেনাপ্রধানকে আমেরিকা থেকে স্যাংশন দেওয়া হয়েছে। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক, শেইম। এ জন্য তারাই (সরকার) দায়ী। তারাই তাদেরকে (সেনাবাহিনী) বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেছে।
সরকারকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া, ‘জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া’ কোনো বিকল্প নাই মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটাই একমাত্র পথ।
আগের দিন আজিজ আহমেদ ও তার স্বজনদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
সেনাবাহিনীকে ‘সবচেয়ে ভরসার স্থল’ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, সেই সেনাবাহিনীকে যদি সরকারের কারণে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়, সেটা কখনই এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না।
র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তারা (সরকার) তো কোনো শিক্ষা নিলেন না। তাদের থেকে একজন পুলিশ বাহিনীর আইজি হয়ে গেলেন। এখন বোধহয় আইজি আছেন। এটার কতটুকু ইমপ্যাক্ট পড়ে, এ ব্যাপারে আমার ধারণা নাই।
সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে’ বলেও অভিযোগ এনে বিএনপি নেতা বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের সূচকে যে অবস্থানে গিয়ে পৌঁছেছে, দুর্নীতির ব্যাপারে যে অবস্থানে পৌঁছেছে, সেটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, দুঃখজনক। দেশের মাথা নীচু হয়ে আসে।
গোটা জাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, দেশ পরনির্ভরশীল ও নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে- এমন অভিযোগও আনেন ফখরুল। বলেন, ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তথাকথিত উন্নয়নের নামে গোটা জাতির ওপর যে ঋণের বোঝা চাপানো হচ্ছে, জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাদের ব্যর্থতার কারণে, মানুষ যাবে কোথায়?
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নে বিএনপি নেতা বলেন, এই ইলেকশন নিয়ে আমি তো জনগণের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখি না। কেউ লক্ষ্যও করছে না কোথাও ইলেকশন হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে সাবেক সাংসদ গোলাম মাওলা রনির গাড়িতে এবং সেগুনবাগিচায় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনুকুল ইসলাম শ্রাবণের ওপরে হামলার নিন্দাও জানান বিএনপি মহাসচিব। দুটি ঘটনাতেই ছাত্রলীগকে দায়ী করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, রুহুল কবির রিজভী, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরাফত আলী সপুসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।