‘ফেসবুক না খুললে উদ্যোক্তাদের জন্য বিকল্প চিন্তা’

8

ইন্টারনেটভিত্তিক সব কিছু ঠিকঠাক হতে শুরু করলেও ফেসবুক কেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য ‘এফ কমার্স’ চালু হওয়ার কোনো লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না। গতকাল রবিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড বা বিডার সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ছিলেন আরও কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী। সেখানে মোবাইল ইন্টারনেট সচল হওয়া ও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অঘটনের ক্ষতিপূরণ নিয়ে আলোচনা হলেও ফেসবুক চালু করার বিষয়ে কোনো সুখবর আসেনি। খবর বিডিনিউজের
ফেসবুক-কেন্দ্রিক বিভিন্ন পণ্য ও সেবা বিপণনকে কেন্দ্র করে দেশে কয়েক লাখ উদ্যোক্তা গড়ে উঠেছে, যাদের বড় অংশই নারী।
প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ‘ফেসবুক কবে খুলে দেওয়া হবে, সে বিষযে সরকার থেকে আজ কোনো পরিষ্কার নির্দেশনা পাইনি। এই মুহূর্তে ফেসবুক না খুললে উদ্যোক্তাদের জন্য কী করা যায়, সে বিষয়ে আমরা সবাই মিলে একটা পরিকল্পনা করতে বসব। ফেসবুক উদ্যোক্তাদের কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়া যায় কি না, সেটাও চিন্তা করছি’।
ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত এক বছরে ই-কমার্স খাতে ডিজিটাল মাধ্যমে ১৬ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আর ক্যাশ-অন ডেলিভারি হয়েছে আরও প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। এ থেকে বাংলাদেশে ই-কমার্স খাত সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়।
বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে শমী কায়সার বলেন, ‘সব মিলে তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিয়ে আমরা বৈঠকে কথা বলেছি। তথ্যপ্রযুক্তির অন্যতম শাখা হচ্ছে ই-কমার্স। এখানে কেবল অভ্যন্তরীণ বাজারে দৈনিক প্রায় আট লাখ অর্ডার ডেলিভারি হচ্ছিল। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী অভ্যন্তরীণ বাজারের ক্ষয়ক্ষতি বুঝতে চেয়েছিলেন। সেখানে আমরা ই-কমার্স মার্কেটের হিসাবটা দিতে চেয়েছি। এ খাতে দিনে ৮০ থেকে ১০০ কোটি টাকার মত লেনদেন হত’।
ফেসবুক বন্ধকালীন বিকল্প কী উপায়ে ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে, সে বিষয়ে আইসিটি খাতের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন ই-ক্যাব সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির বড় একটা ব্যবসা হয় ফেসবুকের মাধ্যমে। এখানে প্রায় ১৫ লাখ উদ্যোক্তা কাজ করছেন। এখন ফেসবুক বন্ধ থাকার কারণে এই ব্যবসাটা করতে পারছে না। আগামি মাসে তারা কীভাবে বেতন দেবেন, সেটাই একটা চিন্তার বিষয়। অনেকে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। সেখানে টাকা কেটে রাখা হলেও বিজ্ঞাপন তো কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার জেরে দশ দিন বন্ধ রাখার পর গতকাল রবিবার বিকালে মোবাইল ইন্টারনেট খুলে দিয়েছে সরকার। এদিন বিকাল ৩টা থেকে মোবাইল গ্রাহকরা তাদের ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ ফিরে পেতে শুরু করেন। তবে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টিকটক বন্ধ রাখা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে দেশজুড়ে সংঘাত-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে গত ১৭ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।