ফটিকছড়িতে দেড় যুগ পর ফুরফুরে বিএনপি-জামায়াত

23

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি

দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি-জামায়াত ফটিকছড়িতে ফের চাঙা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর থেকে মাঠে ময়দানে বিজয় ও শান্তি মিছিল-সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপি-অঙ্গসংগঠন এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ। কারাগারে থাকা দলগুলোর অনেক নেতা-কর্মী ইতোমধ্যে মুক্তি লাভ করায় তাদের আনন্দ বেড়েছে বহুগুণে।
ফটিকছড়ি বিএনপি দীর্ঘ সময়ে মাঠে ময়দানে সরাসরি তাদের কর্মসূচি পালন করলেও জামায়াতকে তেমন একটা সরাসরি কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি। তাদের মতে, তখনকার সরকারি দলের মামলা-হামলার কারণে তারা কৌশলে কর্মসূচি পালন করেছেন। আ’লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরের দিন উপজেলা সদরে জামায়াত-শিবির বিশাল মিছিল করে তাদের শক্তি প্রদর্শন করে। এসময় তাদের বেশ উচ্ছ্বসিত উৎফুল্ল দেখা গেছে।
অন্যদিকে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ফটিকছড়ি সদরে গত শুক্রবার শান্তি ও সম্প্রীতি র‌্যালি শেষে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক কর্ণেল আজিম উল্লাহ বাহার। এসময় তিনি শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান।
আ’লীগ সরকার ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দিন ৫ আগস্ট বিকেলে ফটিকছড়ির ছাত্র-জনতার মাঝে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহব্বায়ক সরোয়ার আলমগীর। এরপরের দিন সারাবেলা তিনি উপজেলার বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শন করে মন্দির পাহারা দেয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন।
একইদিন সন্ধ্যায় ফটিকছড়ি জামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে (বাবুনগর মাদ্রাসা) হেফাজতে আমির কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সাথে দেখা করেন।
এসময় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
পরদিন ৭ আগস্ট সরওয়ার আলমগীর ফটিকছড়ি সদরে এক সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিনয়ী হওয়ার আহবান জানান। সর্বশেষ গত শুক্রবার আ’লীগের ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত দক্ষিণ ফটিকছড়ির নানুপুর বাজারে বিজয় ও শান্তি মিছিলে অংশ নিয়ে তিনি পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই দেড় যুগ পার করেছে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে। রাজনীতির মাঠের কঠিনমিত্র বিএনপি-জামায়াত ও তাদের জোটসঙ্গীরা স্বাধীনভাবে করতে পারেননি কোনো সাংগঠনিক সভা-সমাবেশও। শত চেষ্টায় বিপদ কাটাতে না পারলেও এবার আকস্মিক এক গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে দীর্ঘদিনের দুই মিত্রকে ক্ষমতার কাছাকাছি এনে দিয়েছে দেশের ছাত্র-জনতা।