প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা সংঘাত শঙ্কায় ভোটাররা

17

রাহুল দাশ নয়ন

তৃতীয় পর্যায়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বোয়ালখালী, আনোয়ারা, পটিয়া ও চন্দনাইশে প্রচারণা শেষ হয়েছে। আগামীকাল (২৯মে) ভোটগ্রহণ হবে। চার উপজেলায় প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন অর্ধশত প্রার্থী। চন্দনাইশে বিনাভোটে নির্বাচিত হওয়ায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হবে না। সবমিলিয়ে চার উপজেলায় ভোটার আছে ৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ৬০১জন। ৩৫৬ ভোটকেন্দ্রের দুই হাজার ১৬৩ কক্ষে ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটগ্রহণে থাকবেন ১১ হাজার ১৭১ জন প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা।
চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক পূর্বদেশকে বলেন, আজ (গতকাল) ‘মধ্যরাতেই প্রচারণা শেষ হবে। আগামীকাল (আজ) থেকে সকল ধরনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।’
ইসি সূত্র জানায়, চন্দনাইশে সাতজন, পটিয়ায় ১৬ জন, বোয়ালখালীতে ১৫ জন ও আনোয়ারায় ১২ জন প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রচারণা করেন। তবে প্রচারণার মাঝপথে কয়েকজন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। চারটি উপজেলাতেই ভোটযুদ্ধ জমে উঠেছে। নির্বাচনের প্রচারণা মাঠ ছাড়িয়ে প্রেস্টিজ ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।
চন্দনাইশে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ চৌধুরী জুনু (ঘোড়া), উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম চৌধুরী (দোয়াত-কলম), ব্যবসায়ী জসীম উদ্দীন আহমদ (মোটরসাইকেল), জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন ফকির (আনারস) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভাইস- চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস-চেয়ারম্যান মৌলানা মো. সোলাইমান ফারুকী (বৈদ্যুতিক বাল্ব), অধ্যাপক মোহাম্মদ একরামুল হোসেন (তালা) ও রূপম দেব (উড়োজাহাজ) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান খালেদা আক্তার চৌধুরী একক প্রার্থী হিসেবে বিনাভোটে জয়ী হয়েছেন।
পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ (আনারস), মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার (দোয়াত-কলম), ভাইস চেয়ারম্যান পদে ঝুলন দত্ত (চশমা), আবু ছালেহ মুহাম্মদ শাহরিয়ার শাহরু (উড়োজাহাজ), মোহাম্মদ বেলাল (বৈদ্যুতিক বাল্ব), সাইফুল হাসান টিটু (মাইক), ডা. এমদাদুল হাসান (বই), মোজাম্মেল হোসেন রাজধন (টিয়া পাখি), আশীষ তালুকদার (তালা), নাজিম উদ্দিন (টিউবওয়েল। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাজেদা বেগম শিরু (কলস), সাজেদা বেগম (প্রজাপতি), কানিজ ফাতেমা শাওন (পদ্মফুল), আফরোজা বেগম জলি (হাঁস), নুর আয়েশা বেগম (ফুটবল) ও সুমি দে ( বৈদ্যুতিক পাখা)।
বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী (মোটরসাইকেল), বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজা (দোয়াত-কলম), বোয়ালখালী উপজেলার বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম সেলিম (কাপ-পিরিচ), বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম নুরুল ইসলাম ( টেলিফোন), বোয়ালখালী পৌরসভা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল আলম শফি (ঘোড়া), ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জাহেদুল হক (হেলিকপ্টার) ও মুহাম্মদ শফিক (আনারস) প্রতীকে নির্বাচন করছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোহাম্মদ মীর নওশাদ (টিউবওয়েল) শফিকুল আলম (টাইপ রাইটার), মোহাম্মদ সেলিম উদ্দীন (তালা), মোহাম্মদ রিদওয়ানুল হক টিপু (চশমা ) ও সজল কান্তি চৌধুরী (উড়োজাহাজ) প্রতীকে নির্বাচন করছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান বোয়ালখালী উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা বেগম (প্রজাপতি), মর্জিনা বেগম (কলসি) ও মোছাম্মৎ উম্মে সালমা (ফুটবল) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আনোয়ারায় বর্তমান চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী (দোয়াত কলম), অধ্যাপক এম. এ মান্নান চৌধুরী (মোটরসাইকেল) ও কাজী মোজাম্মেল হক (আনারস) প্রতীকে লড়ছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সুগ্রীব মজুমদার দোলন (তালা), মোহাম্মদ আবু জাফর (টিয়া পাখি), সালাউদ্দিন সারো (টিউবওয়েল), মো. আবদুল মান্নান মান্না (চশমা), প্রদীপ দত্ত (মাইক) ও সন্তোষ কুমার দে (বই) লড়ছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম বেগম (ফুটবল), অ্যাডভোকেট চুমকি চৌধুরী (হাঁস) ও পারভীন হাবিব (কলসি) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চার উপজেলায় অনেকে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েও শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। নেতার সিদ্ধান্ত ও ব্যক্তিগত কারনে অনেকেই নির্বাচনী মাঠ ছেড়েছেন। চন্দনাইশে দুইজন, পটিয়ায় দুইজন, আনোয়ারায় দুইজন ও বোয়ালখালীতে চারজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যেই হবে জমজমাট লড়াই। প্রার্থীদের এমন লড়াইয়ের আভাসে সংঘাত শঙ্কায় আছেন ভোটাররা। চার উপজেলাতেই হেভিওয়েট প্রার্থীরা মাঠে থাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।