পেকুয়া প্রতিনিধি
টানা তিন ধরে ভারী বর্ষণে পেকুয়া সদর, শিলখালী, টইটংসহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের অন্তত বিশটির বেশি গ্রামের ছোট বড় গ্রামীণ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। প্লাবিত নিম্নাঞ্চলের সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েনি শিক্ষার্থীরা। এদিকে পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরি নদী দিয়ে প্রবাহমান পানির স্রোতে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে পূর্বমেহেরনামা এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের আশংকা রয়েছে। ফলে পেকুয়া সদর ও শিলখালী ইউনিয়ন গত বছরের ন্যায় বন্যার পানিতে এবারও মানুষের ঘরবাড়ি সব তলিয়ে যেতে পারে। পানিবন্দি হয়ে পড়বে অন্তত লক্ষাধিক মানুষ। হারাবে পুকুরের মাছ, হাস মুরগী গবাদি পশু পাখি, মৎস্য ঘেরসহ অসংখ্য গ্রামীণ সড়ক। দুর্ভোগে পড়বে জনজীবন। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। গত বছরে পূর্বমেহেরনামা এলাকায় বেড়িবাঁধটির একাংশ ভাঙ্গার কারণে পেকুয়ার মানুষ পানিবন্দি ও ঘর বাড়ি তলিয়ে গিয়েছিল, সে ভয় এখনো কাটেনি। এবারও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে মাতামুহুরি নদীর পানি উজান থেকে নেমে আসার ভয়ে আতংকে রয়েছেন পেকুয়া সদরবাসী। ঐ এলাকায় এবারও বেডিবাঁধটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ, গতরাতে বৃষ্টিপাত হলে ভেঙ্গে যাওয়ার আশাংকা বিদ্যমান মনে করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সাহেদ জানান, সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধে লোকজন নিয়ে আছি, এখনো সমস্যা হয়নি তবে রাতে ভারীবৃষ্টিপাত হলে পাহাড়ি ঢলে ঝুঁকিপূর্ণ বেডিবাঁধটি ভেঙ্গে যেতে পারে।
৯ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু ছালেক জানান, বাগগুজারা বাজারের উত্তর পাশে সামান্য একটু বেডিবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ দেখা দিলে সকালে লোকজন নিয়ে মেরামত করেছি।
সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান এম শাহেনেওয়াজ আজাদ জানান, সার্বক্ষণিক তদারকি করছি, কোন এলাকায় যাতে কোন বেডিবাঁধ ভেঙে না যায়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাফায়াত আজিজ রাজু বলেন, পূর্ব মেহেরনামা একটি বেডিবাধ ঝুঁকিপূর্ণ ওখানে সবাই সতর্ক রয়েছে এবং টইটং ইউনিয়নে একটি গ্রামে কয়েকটা বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। এ বর্ষণে কারো যেন ক্ষয়ক্ষতি না হয় আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, সহকারী কমিশনার ভূমি নুর পেয়ারা বেগম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবু তাহের, টৈটং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে অতিবৃষ্টিতে প্লাবিত স্ব স্ব ইউনিয়নের গ্রামগুলি পরিদর্শন করেছি। এছাড়া প্রতিটা সময় তদারকি ও নজরদারি রাখছি যেন কোন জায়গাতে বেডিবাঁধ না ভাঙ্গে। মানুষের জানমাল ক্ষয়ক্ষতি যেন না হয়। নিম্মাঞ্চল এলাকা এবং পাহাড় কিংবা পাশে বসবাসরত লোকজনকে পাহাড় ধস থেকে সাবধান থাকতে সতর্ক করা হয়েছে।