পেকুয়ায় ছুরিকাঘাতে শ্রমিকদল নেতা খুন

6

পেকুয়া প্রতিনিধি

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদর পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শওকত (৩৮) ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। এ সময় তার ভাই মোহাম্মদ শাকের (২৭) ও চাচাতো ভাই মোহাম্মদ তারেক (২৩) আহত হন। আহতদের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। গত সোমবার রাত ১০টার দিকে পেকুয়া বাজারের পশ্চিম পাশে ওয়াপদা অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, পেকুয়া সদর পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, অপর পক্ষটির নেতৃত্ব দেন সাবেক সহসভাপতি বদিউল আলম ও সাজ্জাদুল ইসলাম।
শ্রমিকদলের ৬/৭ জন নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে শ্রমিকদলের দুই পক্ষই পেকুয়া সিএনজি, টেম্পু, অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের লাইন দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এর জের ধরে ও দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধে কয়েকদিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
শ্রমিকদলের কয়েকজন নেতা বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে গত রবিবার রাতে শহিদুল ইসলাম শওকত এবং সাজ্জাদুল ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ঘটনা ঘটে। বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পেকুয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ পর্যন্ত গড়ায়। তিনি সোমবার সকাল ১০টার দিকে দু’পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে বিরোধ মীমাংসা করে দেন এবং বিশৃঙ্খলা করলে দল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। এরপর রাত আটটার দিকে ভোলাইয়াঘোনা রাস্তার মাথায় সাজ্জাদুল ইসলামের এক চাচাতো ভাইকে মারধর করেন শওকত ও তার ভাই শাকের। এ ঘটনার জের ধরে ওইদিন রাতে সাজ্জাদুল ইসলাম ও বদিউল আলমের নেতৃত্বে দলবদ্ধ দল শওকত, সাকের ও তারেকের ওপর অতর্কিত হামল করে। এতে তিনজনই ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। এদের মধ্যে আহত শওকত প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে আসলে তার পিছু নেয় হামলাকারীরা। কিছু দূর গিয়ে জুবায়দা কনস্ট্রাকশন নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে রাস্তার পাশে লুটিয়ে পড়ে শওকত। সেখানেও তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে সাজ্জাদ ও বদিউল আলম। এতে শওকতের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনরা আহতদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় শওকতসহ তিন জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা করা হয়। হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছালে শওকত মারা যান। নিহতের পরিবারের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
শওকতের নিকটতম আত্মীয় সংবাদকর্মী মো. ফারুক জানান, শওকতের জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ বিষয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পেকুয়া উপজেলা শ্রমিকদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, হতাহত ও হামলাকারী সবার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। এখানে শ্রমিক সংগঠনের কোন বিষয় সম্পৃক্ততা নেই। হামলার খবর পেয়ে আমি ও ওসমান গণি আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছি।
পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, হামলার কথা শোনার পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। কারা খুন করেছে এ রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।