পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা সিইও’র হাতে

3

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) অচলাবস্থা নিরসনে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। গতকাল মন্ত্রণালয়টির সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এমনটা জানানো হয়েছে।
মূলত, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মেয়র ও প্যানেল মেয়ররা কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় নাগরিক সেবা নিশ্চিত ও প্রশাসনিক কর্মকান্ডে স্থবিরতা বিরাজ করছিল। তাই কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এর আগে গত মঙ্গলবার চসিকের বর্তমান অবস্থার কথা জানিয়ে চিঠি লিখেন চসিকের প্রধান নির্বাহী।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ৪ আগস্ট থেকে মেয়র কার্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। বারংবার চেষ্টা করেও অদ্যাবধি তার সাথে কোনো যোগাযোগ করা যায়নি। যার ফলশ্রুতিতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সম্পাদনের নিমিত্তে জ্বালানি ক্রয়সহ দৈনন্দিন জনগুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে অসুবিধা হচ্ছে।’
এছাড়া চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৬ আগস্ট থেকে কাউন্সিলররাও অফিস করছেন না। বেশিরভাগ কার্যালয় ভাংচুর করা হয়েছে। এমন অবস্থার কথা জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী নয়দিন ধরে কার্যালয়ে আসছেন না। হদিস নেই ৫৫ কাউন্সিলরেরও। এ অবস্থায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অফিসে আসা-যাওয়া করলেও মেয়র-কাউন্সিলরদের অনুপস্থিতির কারণে করপোরেশনের সব কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
চসিকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পটপরিবর্তনের পর কয়েকটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে, যাতে প্রায় চার কোটি ৩২ লাখ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড কার্যালয়ের সচিবদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে নাগরিক সেবা দ্রæত চালুর চেষ্টা করছেন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর নগরীর বহদ্দারহাটে মেয়রের বাড়ি, ২৭টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের পাঁচটি কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী আর কার্যালয়ে আসছেন না। ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়গুলোও তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল গত ছয়দিন। তাদেরও কেউ কার্যালয়ে আসছেন না। ফলে জন্মনিবন্ধন সনদ, জাতীয়তা সনদ, চারিত্রিক সনদ, উত্তরাধিকার সনদ, ওয়ারিশান সনদ নিয়ে ভোগান্তিতে আছেন সাধারণ নাগরিকরা।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পরিচ্ছন্ন বিভাগ ও রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের অধীন হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা চালু আছে। নাগরিক সেবা আগের অবস্থায় ফেরাতে আমরা কাজ করছি।’