চন্দনাইশ প্রতিনিধি
টানা এক সপ্তাহে’র ভারী বর্ষণে পাহাড়ি ঢলের পানি শঙ্খনদী ও বরুমতি খালের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় চন্দনাইশে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যায় পরিণত হয়েছে। ফলে মাছের প্রজেক্ট, আউশ ধান, আমন ধানের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় সড়কের উপর দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া চন্দনাইশ পৌরসদর, নয়াহাট, চৌধুরীপাড়া, গাছবাড়িয়া, ছৈয়দাবাদ, হাশিমপুর, ধোপাছড়ি, কাঞ্চনাবাদসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার অসংখ্য মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ঘর-বাড়িতেও ঢুকে গেছে পানি। টানা ভারী বর্ষণে চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ সড়কের উপর দিয়ে দ্রুতবেগে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ায় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের রোপণ করা সবজি ক্ষেত, আউশ ধান, আমন ধানের বীজতলা ও রোপা আমন ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
চন্দনাইশ পৌরসভার নয়াহাট, পৌরসদর, গাছবাড়িয়া খানহাটসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলের অসংখ্য বসতঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাছ চাষের প্রজেক্ট ডুবে যাওয়ায় মৎস্যচাষীরা ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আজাদ হোসেন বলেন, পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হওয়ার কারণে আউশ ধান, আমন ধানের বীজতলা,রোপা আমন বেশ কিছু এলাকায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে তেমন ক্ষতি হবে না আশা করি। তবে সবজি ক্ষেতে দীর্ঘ সময় ধরে পানি জমে থাকলে সবজি ক্ষেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিনা খবরাখবর নেয়া হচ্ছে। কি পরিমাণ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে চন্দনাইশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দিয়ে সার্বক্ষণিক খবরাখবর নেয়া হচ্ছে। উপজেলার সাইক্লোন সেন্টারগুলো খোলা রাখা হয়েছে। সৃষ্ট দুর্যোগ, বন্যা, দুর্যোগকালীন সময়ে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় দায়িত্ব পালন, উপজেলার কন্ট্রোল রুমে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে সার্বিক পরিস্থিতির প্রতিবেদন প্রদান, সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতির জন্য সকল কর্মকর্তাদের কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকার জন্য বলা হয়েছে। ২টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে পৃথক ট্যাক অফিসার নিয়োগ করে মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, অতিবৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের ফলে উপজেলার ৯১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সার্বক্ষণিক অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।