পানিতে থৈ থৈ নগরী

23

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে নগরবাসী। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নগরীর নিম্নাঞ্চল। বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও অলিগলি হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকে বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা। বৃষ্টিপাত আরও ৪৮ ঘণ্টা চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা।
সরেজমিন দেখা যায়, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর মোহাম্মদপুর, মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, মুরাদপুর, শোলকবহর, ২ নম্বর গেট, বাকলিয়া, হালিশহর, সিডিএ আগ্রাবাদ আবাসিক এলাকা, চকবাজার, ডিসি রোড, একে খান ইস্পাহানি সিটি গেট এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
এসব এলাকার কোনো কোনো সড়কে কোমর সমান পানি জমেছে। সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় সকালে কর্মস্থলগামী চাকরিজীবীরা দুর্ভোগে পড়েন। একইভাবে ভোগান্তিতে পড়েন সন্ধ্যায় ঘরে ফেরার সময়েও। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। আবার সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকদের ধর্মঘটের কারণে নগরে অটোরিকশার পরিমাণও কম ছিল। এতে মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়।
অফিস শেষ করে বাসায় ফিরেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী মাজেদুল ইসলাম। তিনি পূর্বদেশকে বলেন, আমার বাসা বহদ্দারহাট। বহদ্দারহাট থেকে পানি ডিঙ্গিয়ে আগ্রাবাদ অফিসে এসেছি। বৃষ্টি হলেই বাসার আশপাশ এলাকার সড়ক ডুবে যায়। আজকেও একই অবস্থা। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে অফিসে আসতে হয়েছে। এখনও একই অবস্থা পানি ডিঙ্গিয়ে বাড়ি ফিরছি।
নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় গৃহিনী তাসলিমা আক্তার পূর্বদেশকে বলেন, জলাবদ্ধতা অভিশাপ থেকে কখন রেহাই পাবো আল্লাহ ভালো জানেন। প্রকল্পের কাজ চলছে কয়েক বছর ধরে। কিন্তু ফলাফল একই, প্রতি বছর পানিতে ভাসতে হয়। একটু বৃষ্টি হলেই বাসায় পানি ঢুকে যায়। প্রত্যেক বছর বলা হয়, আগামী বছর পানি উঠবে না। তবে যে লাউ, সে কদু।
এদিকে চট্টগ্রামের আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৭৬ মিলিমিটার। এর মধ্যে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬০ মিলিমিটার। যদিও এর আগের দিন ১২৩ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস। তবে আজ সকাল ৯টার পর থেকে বাড়তে থাকে বৃষ্টির দাপট। ভারী বৃষ্টির কারণে সমুদ্র বন্দরগুলোকে দেওয়া ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়া থাকবে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাস কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এ প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গবীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসম‚হের ওপর দিয়ে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। ভারী বৃষ্টিপাতে ফলে পাহাড়ধসের শঙ্কাও রয়েছে। লঘুচাপ সক্রিয় থাকায় সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।