পদত্যাগের দাবিতে চবি উপাচার্যের বাসায় তালা

3

চবি প্রতিনিধি

পদত্যাগের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের বাসভবনে তালা দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরীর কার্যালয়েও তালা দেয় তারা।
গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কবৃন্দ উপাচার্যের বাসভবনে তালা দেন। এরপর প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে পর্যায়ক্রমে দুই উপ-উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দেয় তারা।
এর আগে বেলা সাড়ে এগারোটায় চাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এর আগেরদিন বৃহস্পতিবার রাত ন’টায় একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শুক্রবার দুপুর বারোটার মধ্যে ভিসি, দুই প্রো ভিসি, প্রক্টর ও সকল আবাসিক হলের প্রভোস্টদের পদত্যাগের দাবি জানায় আন্দোলনের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ।
শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে ৫ দফা দাবির কথা জানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ। তাদের দাবিগুলো হলো-
১। যাদের ছত্রচ্ছায়ায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংসভাবে হামলা চালিয়েছে, বোনদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাসায় বোমা হামলা করার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, সেই প্রক্টরিয়াল বডিকে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের তাড়িয়ে দিয়ে ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডারদের আবাসিক হলে আশ্রয় দেওয়ায় সকল হল প্রভোস্টদের এবং এসকল বিষয়ে নিরব ভ‚মিকা পালন করায় ভিসি ও প্রো-ভিসি (একাডেমিক ও প্রশাসনিক) কে শুক্রবার দুপুর ১২ টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে।
২। নতুন প্রশাসন নিয়োগের ক্ষেত্রে চিহ্নিত দালাল (সন্ত্রাস ও স্বৈরাচারের সহযোগী, দুর্নীতিবাজ, অবৈধ উপায়ে নিয়োগকৃত) দের পদায়ন করা যাবে না। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে। গত দুই বছরে অবৈধ উপায়ে নিয়োগকৃত (অস্থায়ী) সকল নিয়োগ বাতিল করতে হবে।
৩। দ্রুত হল খুলে দিয়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দিতে হবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে অনলাইনে ফরম দিতে হবে। পূর্বের সংগৃহিত ফরম বাতিল বলে গণ্য হবে।
৪. অছাত্র, চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা (তাদের তালিকা সংগৃহিত আছে) আবাসিক হলে থাকতে পারবে না।
৫. নতুন প্রশাসনকে আগামি ৪ মাসের মধ্যে চাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিকে আল্টিমেটামের সময় শেষ হওয়ার পরও চবি প্রশাসন পদত্যাগ না করায় শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রশাসনের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয় তারা। বিকেল চারটার দিকে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে অগ্রসর হয়। সেখানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে তালা দেয়।