নির্বাচনী জনসভায় ট্রাম্পের ওপর হামলা নিন্দনীয়

10

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে গণতন্ত্রের প্রবক্তা। প্রেসিডেন্টিয়াল গণতন্ত্রের মডেল। সে দেশে সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্টপ্রার্থীর উপর হামলা সমগ্রবিশ্বের মানুষকে হতবাক করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার পর একজন পুরুষ হামলাকারী সিক্রেট সার্ভিস সদস্যদের গুলিতে নিহত হয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, গুলি তার কানে লেগেছে এবং মনে হয়েছে বুলেট তার চামড়া ঘেঁষে বেরিয়ে গেছে। সিক্রেট সার্ভিস জানিয়েছে, এ ঘটনায় হামলাকারীর গুলিতে অন্য এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। পেনসিলভানিয়ায় এক সমাবেশে ট্রাম্পের ওপর ‘দৃশ্যতঃ প্রাণঘাতী হামলার’ এ চেষ্টা হয়েছে।এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প মেঝেতে বসে পড়ছেন এবং এরপর তিনি যখন দাঁড়ান তখন তার মুখের এক পাশে রক্ত দেখা যাচ্ছিলো।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এ হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এদিকে, ঘটনার পর দেয়া এক পোষ্টে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ায় সিক্রেট সার্ভিস ও অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেই সাথে নিহত ব্যক্তির পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানিয়েছেন ট্রাম্পের সমাবেশের এই ঘটনার জন্য সন্দেহভাজন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। একই সাথে সমাবেশে থাকা অন্য এক ব্যক্তিও নিহত হয়েছেন। স্থানীয় ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি জেনারেল রিচার্ড গোলডিনজার বার্তা সংস্থা এপি ও স্থানীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পেনসিলভানিয়ার বাটলারে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। বক্তব্য শুরুর পাঁচ মিনিট গুলির শব্দ শোনা যায়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সিক্রেট সার্ভিস সদস্যরা ট্রাম্পকে ঘিরে ফেলেন। তার কানে ও মুখের এক পাশে রক্ত দেখা গেছে।
মঞ্চ থেকে নামিয়ে গাড়ীতে ওঠানোর সময় তাকে মুষ্টিবদ্ধ হাত আকাশের দিকে তুলতে দেখা যায়। সিক্রেট সার্ভিস মুখপাত্র অ্যান্থনি গুগলিয়েলমি বলেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট নিরাপদ এবং ঘটনাটি সিক্রেট সার্ভিস তদন্ত করছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার দল জানিয়েছে যে সাবেক প্রেসিডেন্ট এখন ‘ভালো আছেন’।

ট্রাম্পকে গুলি করা ব্যক্তি রিপাবলিকান পার্টির নিবন্ধিত ভোটার : সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর গুলি চালানো ব্যক্তি রিপাবলিকান পার্টির নিবন্ধিত ভোটার ছিলেন। তার নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। গতকাল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে শনিবার হামলার ঘটনায় তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ট্রাম্পের ওপর হামলায় সারা (তার স্ত্রী) এবং আমি হতবাক হয়েছি। আমি তার নিরাপত্তা ও দ্রæত সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করি। হুন্ডুরাস প্রেসিডেন্ট জিওমোরা ক্যাস্ট্রো ডি জেলিয়া বলেন, সহিংসতা আরও সহিংসতার জন্ম দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে এমন হামলায় আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেন, এমন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আমি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য প্রার্থনা করি।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেন, গণতন্ত্র বিরোধী যে কোন সহিংসতার বিপক্ষে আমরা। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্রুত আরোগ্যের প্রার্থনা করি। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
ইউ পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেফ ব্যারেল ফন্টিলিস বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর হামলায় অবাক হয়ে গেছি। আমি এ হামলায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। আবার বলছি, আমরা রাজনৈতিক হামলা বিপক্ষে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন ট্রাম্পের ওপর গুলির ঘটনা অনভিপ্রেত।
গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার স্বার্থে সমগ্র বিশ্বের মানুষ এহেন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আশা করে না। আমরাও এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।