নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে সরে গেলেন আ. লীগ নেতা

0

বান্দরবান প্রতিনিধি

প্রচার-প্রচারণা স্থগিত করে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানপ্রার্থী একেএম জাহাঙ্গীর। মূলত নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় তিনি নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত জানান। আগামী ৮ মে ৮ম বারের মতো বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন।
কিন্তু সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর হঠাৎ করেই সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে মাঠ কর্মীদের এবং নিজের নিরাপত্তা ঝুঁকির বিবেচনা থেকে তিনি সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। আনারস প্রতীকে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় সরব ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তার নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টার শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে গেছে। তার হঠাৎ করে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
গত সোমবার সকালে বান্দরবান জেলা শহরের হোটেল প্লাজা কনফারেন্স কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে তিনি মতবিনিময় করেছিলেন। এসময় তিনি বলেন, নির্বাচনে আমাকে প্রাণনাশের দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমার সমর্থনে যারা কাজ করছে তাদেরকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এমনকি ৬টি ইউনিয়নে আমি কাজ করতে পারছি না। ফলে আমার পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।
গতকাল মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বলেন, পারিপার্শ্বিক দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান চাপে আমি মানসিক দিশেহারা। কখন কি ঘটে যায়, এটি অনুমান করা যাচ্ছে না। প্রতিনিয়ত যেভাবে আমাকে এবং আমার কর্মী-সমর্থকদের চাপ দেয়া হচ্ছে এতে করে আমার পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি যেহেতু আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। আমার জনগণের ক্ষয়ক্ষতি হোক সেটা চাই না। কারো জীবন বিনাশ হোক তা চাই না। এমন নির্বাচন আমার দরকার নেই।
তিনি জানান, আমার প্রতিপক্ষ বিএনপির জেলা কমিটির সহ-সভাপতি। তিনি আমাদের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্যের সমর্থিতপ্রার্থী। সদর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের মধ্যে ৪ ইউনিয়নে আমি যাতে প্রচার-প্রচারণা না করি, আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার না করি, সে জন্য বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। এই বিষয়টি আমি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি। ৭ বার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আমার প্রিয় নেতা বীর বাহাদুর যদি ভেবে থাকেন আমি নির্বাচন করলে সমস্যা, তাহলে আমার মতে এই নিার্বচন থেকে সরে দাঁড়ানোই আমার জন্য উত্তম।
জানা গেছে, মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে আব্দুল কুদ্দুস নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানও।
আগামি ৮ মে বান্দরবান সদর ছাড়াও আলীকদম উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সদর উপজেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা রয়েছে ৭১ হাজার ৪৪৪ জন। এরমধ্যে নারী ৩৩ হাজার ৮৭৪ ও পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৫৭০ জন। এছাড়াও স্থায়ী ভোট কেন্দ্র ৪৫টিসহ মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা রয়েছে ১৬৯। তবে একই তারিখে রোয়াংছড়ি ও থানছি উপজেলার নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও কুকি চিন ইস্যুতে এই ২ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করেছেন নির্বাচন কমিশন।