নিরপরাধ ব্যক্তিকে যেন আটক করা না হয় : কাদের

9

পূর্বদেশ ডেস্ক

বর্তমান পরিস্থিতিতে গণগ্রেপ্তারের নামে কোনো নিরপরাধ যেন অপরাধী সাব্যস্ত না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে যেন আটক করা না হয়। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক যৌথ সভায় তিনি এ অনুরোধ জানান। খবর বাংলানিউজ’র
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের চিহ্নিত করছে। আমাদের জানা মতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে আটক করা হচ্ছে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা বলতে চাই, এ গণগ্রেপ্তারের নামে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন অপরাধী সাব্যস্ত না হয়, গ্রেপ্তার না হয়। কোনো নিরীহ ব্যক্তিকে হয়রানি করা যাবে না। গ্রেপ্তারের সংখ্যা বাড়াতে গিয়ে কেউ যেন অতি উৎসাহী হয়ে নিরপরাধীকে ধরা না হয় সেজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিশেষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিছু দিন ধরে অসহায় নিরাপদ শিক্ষার্থীদের আটক করার বিষয়ে সরকারের নীতির সমালোচনা করতে গিয়ে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর কাছে প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, মির্জা ফখরুলের কাছে সবাই নিরপরাধ, সবাই অসহায়। তাহলে প্রশ্ন ধ্বংসযজ্ঞ চালাল কারা? কারা অগ্নিসংযোগ করল? কারা রাষ্ট্রের সম্পদ ভস্মীভূত করল? দেশে যে নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে এগুলো কারা করেছে? আজকে কথায় কথায় সরকার ও আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করা হয়। আমি পরিষ্কার বলতে চাই এ ঘটনা প্রবাহে আমরা আওয়ামী লীগের লোকেরা, কর্মীরা আক্রান্ত। আমরা আক্রমণকারী ছিলাম না। এখন অপবাদ দেওয়া হচ্ছে আক্রান্তদের। আমরা আক্রান্ত ছিলাম, আমাদের হাতে অস্ত্র ছিল না। আমরা আমাদের কর্মীদের অস্ত্র নিয়ে সজ্জিত হয়ে কোথাও অবস্থান নিতে বলিনি।
তিনি বলেন, গত সোমবার (২৯ জুলাই) গণভবনে অনুষ্ঠিত ১৪ দলের সভায় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা, নাগরিক সমাজ দাবি করে আসছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের একটি রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের হাইকোর্টের রায় বহাল রাখা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জামায়াত ইসলামীকে দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে উল্লেখ আছে। মূলত জামায়াত ধর্মের মুখোশ পরা সা¤প্রদায়িক উপশক্তি। নানান সময় তাদের দ্বারা প্রকাশ্যে ও গোপনে নানা তৎপরতা, নাশকতা, ষড়যন্ত্র, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং দেশের জনগণও সেটা অবহিত। এসব বিষয় বিবেচনায় ১৪ দলের সভায় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে সরকার। আরও প্রক্রিয়া কি হবে তার আইনগত ভিত্তি থেকে শুনে সরকার শিগগিরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। আমরা আইনগত ভিত্তি দেখে নিতে চাই। যাতে কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে এ অপশক্তি আর কোনো সুযোগ না পায়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে গুজব আতঙ্ক সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, গুজব সৃষ্টিকারীদের তথ্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাতে হবে।
যৌথ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি প্রমুখ।