দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে ভালো খেলোয়াড় তৈরি করুন

5

বিশ্ব পরিমন্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভালো খেলোয়াড় তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও ফুটবল জনপ্রিয় খেলা। এ খেলার প্রসারের লক্ষ্যে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। গতকাল শনিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে ‘শেখ হাসিনা আন্তঃব্যাংক ফুটবল টুর্নামেন্টের’ চূড়ান্ত খেলা উপভোগ করেন এবং পুরস্কার বিতরণ করেন। প্রতিযোগিতায় ইসলামী ব্যাংক পিএলসি ২-০ গোলে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসিকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। খবর বিডিনিউজের
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ফুটবল খেলতেন, আমার ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামালও ফুটবল খেলতেন। এখন আমাদের নাতি-নাতনিরাও ফুটবল খেলছে। দেশের এই জনপ্রিয় খেলার উন্নতির লক্ষ্যে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে সরকার। বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকে খেলাধুলার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেন। খেলাধুলার মাধ্যমে প্রতিযোগিতার চর্চা গড়ে ওঠে। এতে নিজেকে দেশের জন্য যোগ্য করে গড়ে তোলা যায়। বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
সময় পেলে তিনি খেলা উপভোগ করেন জানিয়ে ফুটবল অনুরাগী শেখ হাসিনা বলেন, ভোরে নামাজ পড়ার পর সময় পেলে ফুটবল খেলা দেখি। সময় পেলে ইউরো ও কোপা আমেরিকা ফুটবল খেলা দেখি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিশ্বমানের খেলোয়াড় গড়ে তুলতে তার সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে, যে কারণে প্রতিটি বিভাগে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, খেলাধুলার জন্য ট্রেনিং করিয়ে উপযুক্ত করে গড়ে তোলাটা সবচেয়ে বেশি দরকার। সেজন্য বিকেএসপি আগে ঢাকায় ছিল এখন প্রত্যেক বিভাগে একটা করে করা হচ্ছে। যেখানে সাঁতার, আর্চারি থেকে শুরু করে ভারোত্তলন, ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, গলফ, শুটিং, দাবা, অ্যাথলেটিক্স, ভলিবল সব ধরনের খেলাধুলার যাতে একটা সুযোগ হয়, ট্রেনিং হয়। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যাতে ট্রেনিং পায় এবং আন্তর্জাতিক মানে যেন আমাদের খেলোয়াড়রা পারদর্শী হয়ে ওঠে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি।
তিনি বলেন, যখনই আমি সরকারে এসেছি তখন থেকেই আমার প্রচেষ্টা বাংলাদেশ যেন খেলাধুলার ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যায়। ছেলে-মেয়েরা এর প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হয়। কারণ, এটি যেমন সকলকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করবে পাশাপাশি এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে উঠবে এবং নিজেকে আরও উন্নত করার চেতনা জাগ্রত হবে।
সারা দেশে খেলাধুলার বিকাশ ও চর্চায় প্রতিটি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ যেন বসে না থাকে। আর ছোটবেলা থেকে যদি চর্চা না হয় তাহলে কী করে উঠে আসবে। মেয়েদের খেলাধুলায় এক সময় বাধা আসার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তার সরকারের উদ্যোগে দেশব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুনামেন্ট থেকে অনেক খেলোয়াড় উঠে আসছে, যারা দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে দেশের জন্য মর্যাদা বয়ে আনছে। খেলাধুলার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার কাজটাও করছে। ফাইনাল শেষে প্রধানমন্ত্রী খেলোয়াড়দের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে দেশের ফুটবলের সার্বিক উন্নয়নের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়শন অব ব্যাংকস (বিএবি) এর চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ২৭ এপ্রিল উদ্বোধন হওয়া টুর্নামেন্টের এবারের দ্বিতীয় আসরে অংশগ্রহণকারী ৩১টি দলের মার্চ-পাস্ট প্রত্যক্ষ করেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।