নিজস্ব প্রতিবেদক
কর্ণফুলী নদীর তীরসংলগ্ন লালদিয়ার চরে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ করছে দুষ্কৃতিকারী একটি চক্র। বন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের সেখান থেকে সরে যেতে বললে দুষ্কৃতকারীরা চাঁদা দাবি করে। এসময় নিরাপত্তাকর্মীদের হুমকি-ধমকিও দেয় তারা। এমন পরিস্থিতিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘দি চিটাগং পোর্ট আ্যক্ট ১৯১৪’ অনুসারে কর্ণফুলী নদীর তীরে চট্টগ্রাম নগরীর পূর্ব পতেঙ্গা মৌজার লালদিয়ার চর এলাকা বন্দরের তফসিলভুক্ত জমি। জায়গাটি বন্দরের পশ্চিমাঞ্চলীয় সংযোগের (হিন্টারল্যান্ড কানেক্টিভিটি) জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ১৯০৮ সালে সেটি বন্দর কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণ করে। তবে পরবর্তী সময়ে স্থানীয় লোকজন লালদিয়ার চরে প্রায় ৭৮ একর জমিতে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে বাড়িঘর নির্মাণ করে। এ সংক্রান্ত রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে উচ্চ আদালত চট্টগ্রাম বন্দরকে অবৈধ বসতি উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। এ আদেশের ভিত্তিতে ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে সেখানে বসবাসরতদের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ১ মার্চ থেকে টানা তিন দিন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় বন্দর।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, উচ্ছেদের পর থেকে গত তিন বছর লালদিয়ার চর সুরক্ষিত ছিল। সেখানে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সার্বিক পরিস্থিতি ও পটপরিবর্তনের সুযোগে সেখানে অবৈধভাবে প্রবেশ করে কাঠামো নির্মাণের কাজ করছে দুষ্কৃতিকারী একটি চক্র। বন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের সেখান থেকে সরে যেতে বললে দুষ্কৃতকারীরা চাঁদা দাবি করে। এছাড়া হুমকি-ধমকিও দেয় তাদের। ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ ধরনের তৎপরতা আদালত অবমাননা হিসেবে গণ্য হবে। যেকোনো ব্যক্তির আইনি প্রতিকার লাভের সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে তিনি আদালতে পক্ষভুক্ত হয়ে সেটি উপস্থাপন করতে পারেন। বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের মধ্য দিয়ে কিছু দুষ্কৃতিকারী লালদিয়ার চরে অবৈধভাবে প্রবেশ করে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব ‘দখলদার’ দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিচ্ছে।
