দুই সপ্তাহ পর স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু

9

পূর্বদেশ ডেস্ক

কোটা আন্দোলনে ব্যাপক সহিংতার জেরে দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ কয়েকটি বড় শহর থেকে আশপাশের গন্তব্যে কমিউটার ও লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ঢাকার কমলাপুর স্টেশনের মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দুটি ট্রেন কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে। সারাদিনে আরও কয়েকটি ট্রেন কমলাপুর ছাড়বে।
সকাল ৭টায় দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার জামালপুরের উদ্দেশে, ৭টা ২০ মিনিটে জয়দেবপুরের উদ্দেশে তুরাগ ছেড়ে গেছে। সকাল ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস কমিউটার ট্রেন ছেড়ে যাবে। এছাড়া চট্টগ্রামগামী কর্তফুলী ট্রেন যাওয়ার কথা আছে। কিন্তু সেটার রেক আটকা পড়েছিল, রেক আসলে যাবে। ৩টায় যাবে জামালপুর কমিউটার। খবর বিডিনিউজের।
তবে গতকাল সকালে ছেড়ে যাওয়া দুটি ট্রেনে যাত্রী তুলনামূলক কম ছিল বলে জানিয়েছেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, সকালে যাত্রী কিছুটা কম। এখনও অনেকেই জানে না। আপনাদের মাধ্যমে প্রচার হলে যাত্রী বাড়বে।
একই কথা জানিয়েছেন বিমানবন্দর স্টেশনের মাস্টার মাহমুদুল হাসান। সকালে দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার আর তুরাগ কমিউটার ছেড়েছে। এছাড়া একটা কনটেইনার ট্রেনও এর আগে ঢাকা ছেড়ে গেল। তবে আজ (বৃহস্পতিবার) তেমন যাত্রী নেই। অনেকেই হয়তো জানে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে জানা গেছে, গতকাল ঢাকা থেকে তিতাস কমিউটার, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, জামালপুর কমিউটার, তুরাগ কমিউটার, কর্নফুলী কমিউটার ও নারায়ণগঞ্জ কমিউটার চলাচল করবে।
একইভাবে চট্টগ্রাম থেকে কর্ণফুলী কমিউটার, সাগরিকা কমিউটার ও নাজিরহাট কমিউটার; ময়মনসিংহ থেকে মোহনগঞ্জ এবয় ঝারিয়া রুটে লোকাল ট্রেন চলাচল করবে। এই ট্রেনগুলো দুইদিক থেকেই চলাচল করে।
গতকাল রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা-ঈশ্বরদী, রাজশাহী-রহনপুর, খুলনা-বেনাপোল, বেনাপোল-মোংলা, রাজবাড়ী-ভাঙ্গা এবং রাজবাড়ী-ভাটিয়াপাড়া রুটে ১২টি লোকাল ট্রেন চলাচল করবে।
১৮ জুলাই দুপুর থেকে বন্ধ থাকার পর বুধবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেকার আলম রাজন বলেছিলেন, বৃহস্পতিবার থেকে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। আপাতত স্বল্প দূরত্বে কিছু ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে এসব ট্রেন চলাচল করবে। দিনের বেলা যখন কারফিউ শিথিল থাকবে তখন চলবে ট্রেন। তবে আন্তঃনগর ট্রেন কবে থেকে চলবে সেই বিষয়টি তিনি স্পষ্ট করেননি।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে গত ১৬ জুলাই মঙ্গলবার ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী ও ময়মনসিংহ, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রেলপথ অবরোধ করা হয়। তাতে কয়েক ঘণ্টার জন্য ট্রেন চলাচলে বিঘœ ঘটে।
পরের দিন ট্রেন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দিন সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেদিন ঢাকার মহাখালীতে রেললাইনে আগুন ধরিয়ে অবরোধ করা হয়। রেলপথের টঙ্গী-ভৈরব অংশের নরসিংদীতে রেললাইন তুলে ফেলা হয়। ঢাকার বাইরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় রেলপথ অবরোধ করা হয়। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ওই দিন দুপুরের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন রুটের ট্রেনের সব যাত্রা বাতিল ঘোষণা করা হয়। এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত পরিসরে চালুর কথা জানায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। তবে শেষ মুহূর্তে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিল রেলওয়ে।