তৌহিদের হ্যাটট্রিক নাকি মোজাম্মেলের প্রথম জয়

4

আনোয়ারা প্রতিনিধি

আনোয়ারায় এবারের উপজেলা নির্বাচন বেশ জমে উঠেছে। এবার দলীয় প্রতীক না থাকায় দীর্ঘদিন পর ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে। আনোয়ারায় এবারের উপজেলা নির্বাচনে সাবেক ও বর্তমান দুই মন্ত্রীর আশীর্বাদপুষ্ট প্রার্থী থাকায় বেশ জমে উঠেছে প্রচার প্রচারণা। রাতদিন পরিশ্রম করে প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভোটারদের দিচ্ছেন নানা উন্নয়ন মূলক প্রতিশ্রুতি।
এবারের উপজেলা নির্বাচনে সাবেক ভূমিমন্ত্রী প্রথমে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মান্নান চৌধুরীকে সমর্থন দিলেও মাঝপথে এসে মান্নানের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীকে সমর্থন দেন। ফলে মান্নানের সমর্থক নেতাকর্মীরা তৌহিদুল হক চৌধুরীকে জেতাতে কোমর বেঁধে নেমেছেন। তবে সব নেতাকর্মীরা আন্তরিকভাবে কাজ করবেন কিনা তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত রয়েছেন।
তৌহিদুল হক চৌধুরীর পক্ষের উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা বোরহান উদ্দিন চৌধুরী মুরাদ জানান, আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নির্দেশনার বাইরে কোনো নেতাকর্মী যাবে না। আমাদের নেতাকর্মীরা সবাই গত কয়েকদিন থেকে তৌহিদ ভাইয়ের জন্য কোমর বেঁধে কাজ করছে। আমরা এখন দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে মাঠে কাজ করছি। ইনশাআল্লাহ বিজয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী।
অন্যদিকে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়শা খানের সমর্থিত প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হক এবারই প্রথম কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার বিরোধী শিবির সাবেক ভূমিমন্ত্রী সমর্থিত পক্ষে দুইজন প্রার্থী থাকায় শুরু থেকেই খুব ভাল অবস্থানে ছিলেন। বর্তমানে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর পক্ষে একক প্রার্থী হওয়ায় আবার নতুন করে হিসেব নিকেশ করতে হচ্ছে। তবে মাঠ পর্যায়ে উভয় প্রার্থীর অবস্থা সমানে সমান।
কাজী মোজাম্মেল হকের পক্ষের যুবলীগ নেতা ও প্রধান সমন্বয়কারী মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা শুরু থেকেই সব ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছি। কাজী মোজাম্মেল হক ভাইয়ের পক্ষে যে
গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। আমরা যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই ধারণার চেয়েও বেশি মানুষ সাড়া দিচ্ছে। ইনশাআল্লাহ, সুষ্ঠু ভোট হলে কাজী মোজাম্মেল হক ভাই বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন।
এদিকে গত জাতীয় নির্বাচন থেকে এবারের উপজেলা নির্বাচনে আনোয়ারাকে বেশ গুরুত্বের সাথে নিয়েছে প্রশাসন। সাবেক ও বর্তমান দুই মন্ত্রীর অনুসারীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করায় ভোটের দিন যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য বাড়তি আইনশৃঙ্খলা সদস্য মোতায়েন থাকবে এই উপজেলায়। নিয়মিত পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি থাকবে অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা। থাকবেন অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট। সব মিলিয়ে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে নির্বাচনী এলাকা। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রিসাইডিং, সহকারি প্রিসাইডিং, পোলিং এজেন্ডদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। তাদেরকে খুব করা ভাষায় বলে দেওয়া হয়েছে কোন প্রার্থীর পক্ষে যাতে কাজ না করে। এ ধরণের কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে সাথে সাথে বহিষ্কারসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নির্বাচন উপলক্ষে আনোয়ারা উপজেলায় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ও তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ক্যাম্প বসিয়ে তারা যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
আনোয়ার উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু জাফর সালেহ জানান, আনোয়ারা উপজেলার নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি সন্তোষজনক। আমরা এভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্বাচনের দিন গোটা উপজেলায় ১৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রত্যেক কেন্দ্রে ৪ থেকে ৫ জন পুলিশ সদস্য, ১৩ থেকে ১৯ জন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বেশ কয়েকটি র‌্যাব ও বিজিবির দল টহলে থাকবে।