তিন অনুঘটকেই বেড়েছে বাজেট বাস্তবায়ন

2

ওয়াসিম আহমেদ

বাজেট বাস্তবায়নে রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। যার পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে নিজস্ব উৎস থেকে আয় বৃদ্ধি ও প্রকল্পের বিপরীতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সরকারি অনুদান ছাড়। এ ছাড়া ম্যাচিং ফান্ড ছাড়া প্রকল্প অনুমোদন অন্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। কেননা আগে ম্যাচিং ফান্ড থাকলে সরকারি অনুদানে প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ টাকা সিটি করপোরেশনকে নিজস্ব আয় থেকে দিতে হয়েছে। বর্তমানে সবচেয়ে বড় প্রকল্পগুলো ম্যাচিং ফান্ড ছাড়া হওয়ায় সরকারি অর্থছাড় চসিকের আয় খাতে যোগ হয়েছে। বিপরীতে কোনো ব্যয় হয়নি। ফলে বাজেট বাস্তবায়ন বেড়েছে।
চসিকের প্রস্তাবিত বাজেট ও সংশোধনী বাজেটের তথ্য পর্যালোচনা করে জানা গেছে, বিদায়ী অর্থবছরে (২০২৩-২৪) নিজস্ব উৎস থেকে ৬৩৯ কোটি ৫৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। আগের বছর (২০২২-২৩) অর্থবছরে একই খাতে আয় ছিলো ৫০৬ কোটি ৬০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। অর্থাৎ সর্বশেষ অর্থবছরে নিজস্ব উৎস হতে সিটি করপোরেশন ১৩২ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা আয় বাড়াতে পেরেছে।
এ খাতে আগামী অর্থবছর (২০২৪-২৫) এর জন্য বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ২৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। মূলত আগামী বছর চসিকের বেশিরভাগ বড় প্রকল্পের শেষ অর্থবছর। অর্থাৎ আগামী বছরেই সর্বোচ্চ পরিমাণে সরকারি অনুদানের ছাড় হবে। ফলে সেটাকে আয় খাত হিসেবে বিবেচনায় নিলে আগামীবারেও বাজেট বাস্তবায়ন বাড়বে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮টি এডিপি প্রকল্পের বিপরীতে ৯৮৩ কোটি ৫ লাখ টাকা অর্থছাড় হয়েছে। যা ওই বছরের সংশোধিত বাজেটের অর্ধেকের চেয়ে বেশি। এ খাতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ খাতে বাজেট ধরা হয়েছে ৯০৯ কোটি টাকা।
পর্যালোচনা করে পাওয়া গেছে, আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিপরীতে সরকারি প্রকল্পগুলোর ম্যাচিং ফান্ড থাকত। অর্থাৎ অনুমোদিত প্রকল্পের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ সিটি করপোরেশনের নিজস্ব আয় থেকে পরিশোধ করতে হত। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নে চসিকের একটি নিজস্ব ব্যয় করতে হত। সর্বশেষ চসিকের ইতিহাসে দুই বড় প্রকল্পই কোনো ধরনের ম্যাচিং ফান্ড ছাড়া শতভাগ সরকারি অর্থায়নে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। যার কারণে চসিকের বাজেট বাস্তবায়ন বেড়েছে।
সে হিসেবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নিজস্ব উৎস থেকে আয় হবে ১ হাজার ২৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে গৃহকর খাত থেকে আসবে ৪৭১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। বিভিন্ন কর হিসাব থেকে পাওয়া যাবে ২০০ কোটি টাকা। সম্পত্তি থেকে ভাড়া ও আয় হবে ১১৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া উন্নয়ন অনুদান খাতে সরকারি ও বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে ৯০৯ কোটি টাকা পাওয়ার আশা করছে সিটি করপোরেশন।