টানা বৃষ্টিতে নগরীর নিচু এলাকায় পানি, দুর্ভোগ

12

মনিরুল ইসলাম মুন্না

দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে দুর্ভোগ বেড়েছে নগরবাসীর। শহরের নিচু এলাকার বাড়িগুলোতে ঢুকছে পানি। এতে রান্নাসহ যাবতীয় কাজে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। পানিতে তলিয়ে গেছে এসব এলাকার সড়ক, অলি-গলি। তাছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে সেখানে দেখা দিয়েছে যানজটর। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
গতকাল মঙ্গলবার ভারী বর্ষণে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেট, জিইসি, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, হাজিরপুল এলাকা তলিয়ে যায় পানিতে। এসব এলাকার কােথাও কোথাও সড়ক হাঁটু থেকে পানিতে তলিয়ে যায়।
হাজিরপুল এলাকার বাসিন্দা নিজাম উদ্দিন টিপু বলেন, আমাদের এখানকার মানুষ এক প্রকার অভিভাবকহীন। এখানে বৃষ্টি হলেই পানি উঠে যায়। আর একবার পানি উঠলে তা সপ্তাহের আগে নামে না। কারণ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা কথা দিয়ে গেলেও কেউ কথা রাখেন না। আমরা এখানে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে টিকে আছি।
টানা বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিল কম। রাস্তায় গণপরিবহন চলাচল করলেও রিকশা-সিএনজি ট্যাক্সিতে দুই থেকে তিনগুণ পর্যন্ত ভাড়া বেশি গুনতে হয়েছে অফিসগামী যাত্রীদের। অনেকে আবার কাকভেজা হয়ে অফিসে পৌঁছান। বহদ্দারহাট এলাকার মো. এজাজ পূর্বদেশকে বলেন, দুই নম্বর গেট যেতে রিকশা ওয়ালারা ১০০ টাকা চাইছে। একটু বৃষ্টি হলেই যেন চালকরা মাথায় উঠে বসে। আমরা কর্মজীবী মানুষ। অতটাকা দিয়ে তো আর যাতায়াত করতে পারি না।
চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবির হোসেন বলেন, ‘টানা বৃষ্টির কারণে আমাদের শ্রেণিতে শিক্ষার্থী কম এসেছে। সড়কে গাড়ি কম থাকাতে অনেকে দূর থেকে আসতে পারেনি।
আগ্রাবাদ এলাকার বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ রশিদ বলেন, বৃষ্টি কমলে বাসা থেকে বের হবো বলে অপেক্ষা করেছিলাম। একটু বৃষ্টি কমাতে বের হই। এতে দেখি বৃষ্টির তেজ বেড়ে গেছে, অফিসে আসতে আসতে কাকভেজা হয়ে যাই।
জানা গেছে, নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, চকবাজার, বাকলিয়ার বিভিন্ন এলাকা, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, পুরাতন চান্দগাঁও থানাসহ নগরীর বেশিরভাগ এলাকা হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল একাধিক সড়কে।
বাকলিয়া সৈয়দ শাহ রোড এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন জানান, পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতে নগরীর নি¤œাঞ্চল তলিয়ে যায়। খালের কিছু অংশ ড্রেজিং করলেও কিছু অংশ এখনও ড্রেজিং হয়নি। অনেক সড়ক উঁচু করবে বলা হলেও এখনও তা হয়নি।
আবহাওয়া অফিস বলছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় সঞ্চারণশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। সেইসঙ্গে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করায় উপক‚লীয় এলাকা ও বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা ও ঝাড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আরও ২-৩ দিন এ ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম পূর্বদেশকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরও দুই থেকে তিন দিন এ ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে।