জনগণের শক্তির কাছে কোনো স্বৈরশাসকই টিকতে পারে না

5

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতা অসাধ্য সাধন করেছেন। স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছেন। অভুতপূর্ব এক জনবিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। গত ১৬ বছরের প্রচন্ড বাড়াবাড়ির কারণে দেশের ছাত্র-জনতার মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, এ জনবিস্ফোরণ তারই বহিঃপ্রকাশ। এ গণঅভুত্থান আবারও প্রমাণ করল যে, জনগণের শক্তির কাছে কোন স্বৈরশাসকই টিকে থাকতে পারে না। দেশ আজ রাহুমুক্ত হয়েছে। শত শত ছাত্র জনতার প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ আজ আবার নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। আমি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আমাদের ছাত্র-জনতাসহ চট্টগ্রামবাসীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং সবাইকে শান্ত থাকার আহবান জানাচ্ছি।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার বিকালে কাজীর দেউড়ির নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয় মাঠে থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মহানগর বিএনপির আহব্বায়ক আলহাজ এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
শামীম বলেন, এ দেশ আমাদের সবার। ইতোমধ্যেই অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনার জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ খুবই প্রয়োজন। এখন সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়, এমন কোন কাজ কাউকে করতে দেওয়া যাবে না। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য।
ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, আজ ছাত্র-জনতার গণবিস্ফোরণের কারণে আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে। সেই বিজয়কে দীর্ঘায়িত করার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় সামাজিক নিরাপত্তাবলয় তৈরি করতে হবে। আমাদের পাশে যারা সংখ্যালঘু রয়েছেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশটা আমাদের সবার। এ দেশ আমাদেরই গড়তে হবে। কেউ যেন কোন নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার না হন। সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ গণমাধ্যমকর্মীর ওপর যে কোন ধরনের আঘাত প্রতিরোধ করতে হবে। যে কোন অপপ্রচার ও অপচেষ্টার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামবাসীকে সচেতন থাকতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ এরশাদ উল্লাহ বলেন, পরাজিত শত্রুরা এক দিনেই শেষ হয়ে যায় না। তারা যখন দেখেছে, তাদের প্রাথমিক পরাজয় হয়েছে, তখন তারা বিষদাঁত বসিয়ে দিতে চাইবে। আমাদের আশপাশে যে সংখ্যালঘু ভাইবোনরা রয়েছে, তাদের আঘাত করার মাধ্যমে ও গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে। আমাদের গণমাধ্যমকর্মী, আমাদের অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে আঘাত করতে চাইবে, আগুন দিতে চাইবে। আমাদের সবার নিজেদের জায়গা থেকে সচেতন থাকতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকার সব অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। নতুন সরকারের কাছে আমাদের সব নেতা কর্মীর মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি।
নাজিমুর রহমান বলেন, আমরা যে বিশাল অর্জনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি, সেই অর্জন যেন প্রোপাগান্ডা দিয়ে, উদ্দেশ্যমূলক কিছু ঘটনা দিয়ে ভূলুণ্ঠিত করতে না পারে। ছাত্র-জনতা রাজপথে থেকে যেভাবে সবকিছু প্রতিরোধ করেছে, তেমনি এ অপচেষ্টাগুলোও প্রতিরোধ করতে হবে। তাহলে আমরা আসল উদ্দেশ্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারব। কাউকে কোন ধরনের হঠকারী কাজ করতে দেওয়া যাবে না। এ সময় বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও চট্টগ্রামবাসীকে শান্ত থাকতে হবে।
এতে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপি নেতা আলহাজ এম এ আজিজ, সৈয়দ আজম উদ্দিন, এস কে খোদা তোতন, হারুন জামান, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, ইকবাল চৌধুরী, এস এম আবুল ফয়েজ, কাজী বেলাল উদ্দিন, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আবুল হাশেম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক নুরুল হক, সদস্য সচিব এড. আবদুল আজিজসহ মহানগর বিএনপির সাবেক নেতৃবৃন্দ, থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি