‘জঘন্য জুলুমতন্ত্র চাপিয়ে দেয়ায় ধিক্কারের পাত্রই থাকবে ইয়াজিদ’

4

‘ইসলামের নামে দুনিয়ার ইতিহাসে প্রথম রাজতন্ত্রের সূচনাকারী পাষন্ড ইয়াজিদ। অন্যায় অগণতান্ত্রিকভাবে গায়ের জোরে মসনদে বসে সমস্ত অন্যায় অপকর্ম সে বৈধতা দিয়েছিল। মদ জুয়া সুদ ব্যাভিচারকে বৈধতা দিয়ে ইয়াজিদ জঘন্য জুলুমতন্ত্র কায়েম করেছিল। ইসলামের নামে বীভৎস জুলুমতন্ত্র চাপিয়ে দেয়ায় যুগে যুগে ধিক্কারের পাত্র হবে পাষন্ড ইয়াজিদ। আর হযরত ইমাম হোসাইনের (রা) নাম বিজয়ী হিসেবে সত্যান্বেষী মানুষের মণিকোঠায় চিরকাল ঠাঁই পাবে। আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) পূত পবিত্রতা, নিষ্কলুষ পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন, সকল দোষ-ত্রুটি, আবিলতা-পংকিলতা থেকে তাঁরা যে মুক্ত; তা স্বয়ং আল্লাহ পাক কুরআন মজিদে এর ঘোষণা দিয়েছেন। পাপ গ্লানি ও মানবিক যাবতীয় কলুষতা থেকেও তাঁরা পবিত্র। সকল প্রকার অপবিত্রতা থেকে আল্লাহ পাক তাঁদের সুরক্ষিত রেখেছেন- এটাই হচ্ছে ইসলামী আক্কিদা। তাই, আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) শান মর্যাদাহানি হয়- এমন কোনো মন্তব্য করা যাবে না। প্রিয় নবী (দ.) তথা আহলে বায়তে রাসূল (দ.), হযরত আলী (রা.), মা ফাতেমা, হযরত ইমাম হাসান (রা.) ও ইমাম হোসাইন (রা.) কে প্রাণ উজাড় করে ভালোবাসা প্রদর্শন, তাঁদের প্রতি শর্তহীন আনুগত্যই ঈমানের দাবি। তাঁদের প্রতি অকুণ্ঠ মহব্বত পোষণ ছাড়া কখনো পরিপূর্ণ ঈমানদার ও জান্নাতের ভাগিদার হওয়া যাবেনা। আর ইয়াজিদিদের মনে প্রাণে ঘৃণা করা এটাও ঈমানের দাবি’।
গতকাল মঙ্গলবার মাহ্ফিলের ৯ম দিনের অনুষ্ঠানে ইরাকের বাগদাদ শরীফ বড়পীর শেখ সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানি (রা.) এর বংশধর শাহ্ সূফি আল্লামা সৈয়দ আফিফ আব্দুল কাদের মনসুর আল-জিলানি আল-বাগদাদী এসব কথা বলেন।
আল্লামা আফিফ জিলানির বক্তব্য বাংলায় ভাষান্তর করে শোনান ড. আল্লামা সাইফুল ইসলাম আজহারি।
আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে শাহাদাতে কারবালা মাহ্ফিল পরিচালনা পর্ষদের আয়োজনে ১০ দিনব্যাপী ৩৯তম আন্তর্জাতিক এই শাহাদাতে কারবালা মাহ্ফিলের ৯ম দিনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তুল ফালাহ্ শাহাদাতে কারবালা মাহ্ফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান একুশে পদকপ্রাপ্ত সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এসময় তিনি বলেন, বিনয়ী, সৎ ও উদার হোন। সমুদ্রের মতো বিশালতা, আকাশের মতো উদারতা, পাহাড়ের মতো দৃঢ় ও অবিচল থাকা, বিপদে ধৈর্য ধারণ এবং সর্বাবস্থায় আল্লাহ পাকের প্রতি শোকর ও সবরের পরাকাষ্ঠা দেখাতে হবে আমাদেরকে। মানুষের প্রতি অসম্মান করা যাবে না। কারো ক্ষতি করা যাবে না। মানুষকে সুন্দর কথা বলে প্রফুল্ল রাখা এটাও ইবাদত।
হাশরের ময়দানে রাসুলুল্লাহর (দ) শান বিষয়ে আলোচনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আল্লামা জাফর উল্লাহ। তিনি বলেন, হাশরের ময়দানে প্রিয় নবী (দ) গুনাহ্গার উম্মতকে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাবেন। সেদিন হাউজে কাউসারের পানি পান করাবেন প্রিয় নবী (দ)। সকল নবী-রাসূলের চেয়ে তাঁর ব্যতিক্রমী শান মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য সেদিন প্রকাশ পাবে।
যুব সমাজের অবক্ষয় রোধে আমাদের করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা হাসান আজহারি। তিনি বলেন, যুব সমাজের অবক্ষয় রোধে ইসলামের দাওয়াত তাদের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে।
মাহ্ফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মহসিন, আমির ভান্ডার দরবার শরিফের সাজ্জাদানশীন শাহসুফী সৈয়দ মুহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা শাহ্ আমিরভান্ডারী, ছিপাতলি জামেয়া গাউছিয়া মুঈনীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা আবুল ফারাহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আলকাদেরী, গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান পেয়ার মুহাম্মদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন মুহাম্মদ দিদারুল আলম চৌধুরী, জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদের সাবেক পেশ ইমাম মাওলানা নুর মোহাম্মদ সিদ্দিকী, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক মাওলানা মীর মুহাম্মদ আলাউদ্দিন, হযরত শাহ আমানত দরবার শরীফের মুতাওয়াল্লী শাহজাদা শরফুদ্দীন মুহাম্মদ শাহীন, ব্যাংকার ইস্কান্দার আলম।
নাতে রাসুল (দ) পেশ করেন শায়ের মোহাম্মদ মহিউদ্দীন তানভীর। মুহাম্মদ আব্দুল হাই মাসুম ও হাফেজ ছালামত উল্লাহর সঞ্চালনায় মাহ্ফিল পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তা ও সদস্যগণ, বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম, বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদনশীনগণের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক ও মাহ্ফিলের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, মোহাম্মদ খোরশেদুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হক, সিরাজুল মোস্তফা, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, দিলশাদ আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, এস এম শফি, মাইনুদ্দিন মিঠু, মাহবুবুল আলম, আবুল মনসুর সিকদার, জাফর আহমদ সওদাগর, সাহেদ করিম, নাজিব আশরাফ, আবদুর রহিম, রফিক আশরাফি, আবদুর রহমান, অধ্যাপক অহিদুল আলম প্রমুখ।
সালাত সালাম শেষে দেশ ও জাতির শান্তি কল্যাণ এবং ফিলিস্তিনিসহ বিশ্বের নিপীড়িত মানবতার পরিত্রাণ কামনায় মোনাজাত করা হয়। মাহ্ফিলে মসজিদের নিচতলায় পর্দা সহকারে নারীরা আলোচনা শোনার সুযোগ পান। বিজ্ঞপ্তি