‘ছাগলরা’ চিহ্নিত করার আগেই অন্যদের ধরুন

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে এনবিআর থেকে সরিয়ে দেওয়া মতিউর রহমানদের মত আর কারা আছেন, তা চিহ্নিত করার দাবি উঠেছে সংসদে।
ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এমন মতিউর আছে ছাগল বা বোবা প্রাণী দ্বারা চিহ্নিত করার আগে তাদের চিহ্নিত করার প্রয়োজন। গতকার বুধবার সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
নাছিম বলেন, “যারা রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকেন যেমন মতিউরকে দুর্নীতি দমন কমিশন, গণমাধ্যম এমনকি আমরা যারা রাজনীতিবিদ আছি তারা চিহ্নিত করতে পারি নাই। তাকে একটি বোবা প্রাণী ছাগল চিহ্নিত করেছে। এমন মতিউর আরও আছে কিনা, যাদের ভবিষ্যতে ছাগল বা অন্য কোন বোবা প্রাণীর চিহ্নিত করার আগে তাদের চিহ্নিত করার প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সংস্থার। খবর বিডিনিউজ’র
এবার কোরবানির ঈদে ঢাকার আলোচিত খামার সাদিক এগ্রো থেকে ১২ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার বায়না করে আলোচনায় আসেন ১৯ বছরের তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাত। জানা যায় এই তরুণ আরো ৫০ লাখ টাকায় বেশ কয়েকটি গরু কিনেছেন। পরে প্রকাশ পায় তিনি এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের ছেলে, যদিও মতিউর গণমাধ্যমে এসে তার পিতৃ পরিচয় অস্বীকার করেন। কিন্তু গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে তার এই অসত্য দাবির বিষয়টি উঠে আসে, ফেনী সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজামউদ্দীন হাজারী জানান, মতিউর ও ইফাতের সম্পর্ক বাবা-ছেলে। ইফাতের মা মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং সেই নারী নিজাম হাজারীর মামাত বোন।
এরপর মতিউর ও তার দুই স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ পেতে থাকে। জানা যায়, এনবিআরের সদস্য হয়ে পুঁজিবাজারে আসার আগে কোম্পানির প্লেসমেন্ট শেয়ার নিতেন মতিউর। এভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করেন।
এসব ঘটনায় মতিউর এনবিআরের সদস্যের পাশাপাশি সোনালী ব্যাংকের পরিচালকের পদ হারান। তার ও স্বজনদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তবে এর আগেই মতিউর দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা বেসরকারি যে কোন দলের বা সংস্থার হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে।
ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে ভবিষ্যতে ঋণ খেলাপি কমানোর দাবি জানান নাছিম। তিনি বলেন, ঋণ খেলাপি, অর্থ পাচারকারী, ব্যাংক লুটেরা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট যারা করে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের তালিকা প্রণয়ন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে এই দুষ্টচক্র, সর্বগ্রাসী, স্বার্থান্বেষী চক্রের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে।