ছয় মাসে সাপের কামড়ে ৩৮ মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

6

পূর্বদেশ ডেস্ক

চলতি বছর দেশে বিষধর সাপ চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপারের আক্রমণ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে গত ছয় মাসে বিভিন্ন সাপে কাটা রোগীর হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর হিসাব দিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেছেন, এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে সাপে কাটার ৬১০টি ঘটনা ঘটেছে; এতে মারা গেছেন ৩৮ জন।
এর মধ্যে সাপের কামড়ে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৪১৬ জন হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছেন। এতে যে ১১ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে রাসেলস ভাইপার দংশন করেছিল পাঁচজনকে। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে রাসেলস ভাইপার নিয়ে জনসচেতনতা তৈরির এক ব্রিফিংয়ে ‘ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের’ তথ্যে সাপে কাটা রোগী ও মৃত্যুর হিসাব দেন রোবেদ আমিন।
তিনি বলেন, বিষধর সাপে কাটার স্বীকৃত চিকিৎসা হচ্ছে অ্যান্টিভেনম। অ্যান্টিভেনম কেনা, বিতরণ, সংরক্ষণ, ব্যবহার এবং ব্যবহার পরবর্তী নজরদারির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের সুফল লক্ষণীয়। সর্পদংশনে আতঙ্ক নয়, সচেতনতা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে মূলত পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম ব্যবহার হয়। সরকারের অসংক্রামক ব্যাধি কর্মসূচি ভারত থেকে এগুলো আমদানি করে থাকে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টার প্রায় দুই বছর আগে রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম তৈরির কাজ শুরু করলেও এখনও তা সম্পন্ন হয়নি।বর্তমানে দেশে অ্যান্টিভেনম ব্যবহার হচ্ছে সেটা ঘোড়ার সিরাম থেকে প্রস্তুত। সময়মত অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা হলে সেরে উঠেন অধিকাংশই রোগীই।
সাপের কামড় বা দংশনের পরে দ্রুত অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা গেলে এর অ্যান্টিবডিগুলো সাপের বিষকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। যার ফলে রোগীর আক্রান্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো বেঁচে যায়, শঙ্কামুক্ত হয় রোগীও।
রোবেদ আমিন জানান, সাপে কাটা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত গবেষণাধর্মী কার্যক্রম, দেশব্যাপী প্রচার এবং সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান করছে। বাংলাদেশে সর্পদংশনের কর্মকৌশল এবং অর্থের ব্যবস্থাসহ সময় উপযোগী কর্মপরিকল্পনা (২০২৩-২০২৮) ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। সর্পদংশন প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মাধ্যমে ২০৩০ সাল নাগাদ শতকরা ৫০ ভাগ মৃত্যু কমানোর লক্ষেই এ কর্মকৌশল সুনির্দিষ্ট ভূমিকা রাখবে।