ছয় জনের গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে তদন্তে

5

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় সীতাকুন্ডের একটি কেন্দ্রে পদার্থবিজ্ঞান প্রথমপত্রের পরিবর্তে দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্নপত্র দেওয়ার ঘটনায় ছয় জনের গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তারা হলেন পরীক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিব শংকর শীল, পরীক্ষা কমিটির আহব্বায়ক মো. নোমান, কেন্দ্রের পরীক্ষা কমিটির সদস্য সহকারী অধ্যাপক শহীদুল্লাহ আজাদ ও প্রভাষক ফারজানা আক্তার, উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) এবং এক পুলিশ কনস্টেবল।
উপজেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি এ ছয়জনের গাফিলতি খুঁজে পান। বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আজ সোমবার জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দেওয়া হবে।
সীতাকুÐ উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) কেএম রফিকুল ইসলাম জানান, রিপোর্টে তিন স্তরে ছয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার গাফিলতির চিত্র উঠে এসেছে। তবে পুরো প্রক্রিয়ায় কেন্দ্র সচিবের অবহেলাই এ ঘটনার প্রধান কারণ। প্রশ্ন পরীক্ষার হলের শিক্ষার্থীদের কাছে যাওয়ার আগে, অন্ততপক্ষে তিন স্তরে ক্রসচেক হয়ে থাকে। কোথাও তা শনাক্ত হয়নি। তাহলে পরীক্ষা কমিটি কী কাজ করে? ট্যাগ অফিসার কি করেছিলেন?
তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলা উদ্দিন জানান, পরীক্ষা শুরুর প্রায় এক মাস আগে প্রশ্ন ঢাকার বিজি প্রেস থেকে জেলা প্রশাসনের ট্রেজারিতে চলে আসে। ট্রেজারিতে প্রশ্নগুলো আসার পর ট্রেজারির দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার একটি রুটিন করে দেন। সেই রুটিনে ন্যূনতম ১৭ কার্যদিবসের আগে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর প্রতিনিধি টিম ট্রেজারি অফিসে গিয়ে বিজি প্রেস থেকে আসা প্রশ্নগুলো বাছাই করে পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী বিষয় ও বিষয় কোড অনুযায়ী পৃথক পৃথক খাম তৈরি করবেন। সেই খামে রুটিন অনুযায়ী নির্ধারিত দিনের পরীক্ষার প্রশ্নপ্রত্র থাকবে। পরবর্তীতে পরীক্ষার দিন সকালে নির্ধারিত দিনের খাম ট্রেজারি অফিস থেকে কেন্দ্র সচিবের প্রতিনিধিরা নিয়ে আসবেন এবং কেন্দ্রে এসে সেই খাম খুলবেন। খাম খোলার পর ফয়েল পেপারের ওপরে লেখা বিষয় কোড যাচাই করবেন। কিন্তু বিজয় স্মরণী কলেজ কেন্দ্রে এ বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করা হয়নি।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল মালেক বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা অবগত আছি। আমরাও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। প্রতিবেদনের আলোকে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ জুলাই ছিল বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্রের পরীক্ষা। কিন্তু সকাল ১০ টায় পরীক্ষার প্রশ্ন হাতে পেয়ে পরীক্ষার্থীরা দেখতে পান পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্র পর্যবেক্ষকদের বিষয়টি অবগত করা হলে তারা ওই প্রশ্ন ফিরিয়ে নেন। এরপর দুপুর ১২টায় নির্ধারিত প্রশ্নে পরীক্ষা শুরু হয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এ এম এম মুজিবুর রহমান বলেন, কেন্দ্রে সরবরাহ করা পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন দিয়ে আর পরীক্ষা হবে না। বিকল্প প্রশ্নে পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা রুটিন অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। এটাকে প্রশ্নফাঁস বলা যাবে না। কারণ এটা ইচ্ছা করে করা হয়নি।