চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিমকে দেখামাত্রই গ্রেপ্তারের নির্দেশ

5

নিজস্ব প্রতিবেদক

চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন ঋণ খেলাপীর দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত জসিম উদ্দীন। দুই হাতে টাকা বিলিয়ে ভোট প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। অথচ তাকে দেখা মাত্রই থানা পুলিশের গ্রেপ্তার করার কথা ছিলো। চন্দনাইশ থানা পুলিশের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে জসিম উদ্দীন ও তাঁর স্ত্রীকে দেখামাত্রই গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান।
বিচারক আদেশে লিখেন, ‘একজন ইচ্ছেকৃত ঋণখেলাপী বিরুদ্ধে থানায় ওয়ারেন্ট থাকা স্বত্ত্বেও থানা পুলিশের নির্লিপ্ততার কারণে দায়িক প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সুযোগ পাওয়া খেলাপী ঋণ আদায়ে আইনগত কার্যক্রমের সাফল্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তাই অবিলম্বে ঋণ খেলাপী জসিম উদ্দিন আহমদ ও তার স্ত্রী তানজিনা সুলতানাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।’
বিষয়টি পূর্বদেশকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম। তিনি জানান, গত ৩০ এপ্রিল পদ্মা ব্যাংকের ৮৯ কোটি টাকা ঋণখেলাপির মামলায় জসিম উদ্দিন ও তার স্ত্রী তানজিনা সুলতানাকে আদালত ৫ মাসের কারাদন্ড দিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। প্রকাশ্যে চন্দনাইশ উপজেলায় প্রচারণা চালালেও পুলিশ জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার না করায় গত সপ্তাহে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন করা হয়। গতকাল রবিবার আবেদনের শুনানি শেষে চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি), চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ও চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জসিম উদ্দিনকে আদালত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, পদ্মা ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ২০১৬ সালে জেসিকা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার জসিম উদ্দিন ৬০ কোটি টাকা ঋণ নেন। এক বছরের মধ্যে পরিশোধ করার চুক্তি থাকলেও তা করেননি। সম্পূর্ণ সুদ মওকুফ-সুবিধা নিয়ে ২০২২ সালে ঋণ পুনঃতফসিল করেন। কিন্তু তারপরও পরিশোধ না করায় ওই ঋণ সুদাসলে প্রায় ৮৯ কোটি টাকা হয়েছে। নগরের লালদীঘি এলাকার ১৬ দশমিক ৫৯ শতক জমির ওপর নির্মিত সাততলা মহল মার্কেট ঋণের বিপরীতে ব্যাংকের কাছে জামানত রেখেছেন। ২০২০ সালের ১৮ জুলাই ঋণ শোধ না করায় পদ্মা ব্যাংক জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে। মামলায় গত ২৯ জানুয়ারি জসিমকে সুদসহ ঋণ পরিশোধের নির্দেশ দেন আদালত। তারপরও ঋণ শোধ না করায় তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।