চীন সফর: শি’র মন জয়ের চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন পুতিন

6

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের চীনে রাষ্ট্রীয় সফর বৈশ্বিক উত্তেজনার মধ্যে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাদের শক্তিশালী জোটকে সামনে হাজির করেছে। ইউক্রেনে আক্রমণের কারণে মস্কো আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও পুতিনকে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়েছেন শি। যা মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে ঐক্যের ইঙ্গিত।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, পুতিনের সফরে রাজকীয় সংবর্ধনার আয়োজন ছিল। লাল গালিচা অভ্যর্থনা, সামরিক কুচকাওয়াজে পুরনো রেড আর্মির গান, শিশুদের জয়োধ্বনি। দুই দেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় আস্থা ও বন্ধুত্বের জয়গান। কিন্তু বাস্তবতা একেবারে ভিন্ন: এই সম্পর্ক এখন আর সমান অংশীদারিত্ব নয়।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা চাইতে চীন সফর করেছেন পুতিন। সফরে চীনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন রুশ নেতা। এমনকি তিনি বলেছেন যে, তার পরিবারের সদস্যরা মান্দারিন ভাষা শিখছেন। ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে পুতিনের এমন বক্তব্য খুব বিরল। শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘ভাইয়ের মতো ঘনিষ্ঠ’। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে থাকা বেইজিংকে আশ্বস্ত করতে অর্থনীতির উন্নয়নের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন পুতিন। কিন্তু শি জিনপিংয়ের প্রতিক্রিয়া ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে সংযত।
তিনি পুতিনকে একজন ‘ভালো বন্ধু ও ভালো প্রতিবেশী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যা একটি লেনদেনের সম্পর্ককে ইঙ্গিত করছে। ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়াকে দুর্বল করেছে এবং চীনের শক্তিশালী অবস্থান সম্পর্কে সচেতন শি।
সফরটির মূল উদ্দেশ্য ছিল অর্থনৈতিক। সফরসঙ্গী হিসেবে পুতিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, অর্থমন্ত্রী ও অর্থনৈতিক উপদেষ্টাকে নিয়ে এসেছেন। যৌথ বিবৃতিতে ‘সহযোগিতা’ শব্দটি ছিল ১৩০ বার। এতে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, দীর্ঘদিনের বিরোধপূর্ণ দ্বীপে একটি বন্দর নির্মাণ এবং জাপান সাগরে নৌ চলাচলের অধিকারের জন্য উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠভাবে এই সফর পর্যালোচনা করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন রাশিয়ার যুদ্ধে সমর্থন দেওয়ার বিরুদ্ধে চীনকে সতর্ক করেছেন। ফলে হারবিন ইউনিভার্সিটিতে পুতিনের পরিদর্শনকে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলে।