চাঁদে ইতিহাস তৈরি করে ফিরছে চীনা মহাকাশযান

3

পূর্বদেশ ডেস্ক

প্রথমবারের মতো চাঁদের দূরবর্তী দিকের নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে চীনের মহাকাশযান চ্যাংই-৬। চীনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর মতে, চ্যাং’ই-৬ গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের সময় রাত ১২:৩০ মিনিটের পর পৃথিবীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলেছেন, চাঁদের পৃষ্ঠ খনন করার জন্য একটি ড্রিল ও রোবোটিক হাত ব্যবহার করে সেখানকার শিলা এবং মাটি সংগ্রহ করতে সফল হয়েছে মহাকাশযানটি।
এ ঐতিহাসিক মিশনের কাজ শেষ করার পর একটি চীনা পতাকাও চাঁদের মাটিতে গেথে দিয়ে আসে চ্যাংই-৬।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং এক এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘মিশনটি সম্পন্ন হল’।
পাশাপাশি এটিকে ‘মানুষের চাঁদকে অনুসন্ধানের ইতিহাসে একটি অভ‚তপূর্ব কীর্তি!’ হিসেবেও উল্লেখ করেন চুনয়িং। খবর বিডিনিউজের
গত মে মাসে চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ হাইনানের ওয়ানচাং কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে চ্যাংই-৬ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয় ও রবিবার এটিকে চাঁদের পৃষ্ঠে নামে।
গভীর ও অন্ধকার সব খাদ দিয়ে ভরা চাঁদের এই দূরবর্তী দিক চিরকাল পৃথিবীর বিপরীত দিকে মুখ করে আছে, এ কারণে এখান থেকে যোগাযোগ ও এখানে রোবটিক অবতরণ অভিযান চালানো অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি’ বলেছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরু-এইটকেন বেসিন নামের বিশাল খাদে অবতরণ করে চ্যাংই-৬। এ গর্তটি প্রায় ১৩ কিমি গভীর ও ২৫ কিমি চওড়া, যা চারশ কোটিরও বেশি বছর আগে তৈরি হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
এটি চাঁদের সবচেয়ে প্রাচীন ও সবচেয়ে বড় গর্ত হওয়ার কারণে এখানে অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ। কারণ, এর পৃষ্ঠের গভীরে চাঁদের মৌলিক বা প্রাচীন বিভিন্ন উপাদান থাকতে পারে।
চাঁদ অনুসন্ধান কর্মসূচির ষষ্ঠ মিশন চ্যাংই, যার নামকরণ করা হয় চীনের চাঁদের দেবীর নামে।
চাঁদের দূরবর্তী পিঠে এটি চীনের দ্বিতীয় সফল মিশনও বটে। এর আগে ২০১৯ সালে সেখানে সফলভাবে অবতরণ করে চ্যাংই-৪। চীন, ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্রমবর্ধমান মহাকাশ প্রতিযোগিতার মধ্যেই এই সফল মিশনের খবর এল।
২০৩০ সালের মধ্যে মানুষকে চাঁদে পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েছে বেইজিং। এদিকে, মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে এই কৃতিত্ব অর্জনের বিষয়ে আশাবাদী।