চলছে নগর আ.লীগের সম্মেলনের তোড়জোড়

18

রাহুল দাশ নয়ন

নানা কারণে চারদফা পেছানোর পর পুনরায় নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। আসছে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বাকি থাকা ৭০টি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা ইউনিটের সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে সম্মেলন কেন্দ্রিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সাংগঠনিক নির্দেশনা ও সম্মেলনের তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নগর আওয়ামী লীগের দলীয় দপ্তর খোলা রাখা হয়েছে।
নগর আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, জুলাই মাসের ১৫ তারিখে থেকে সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু করার চিন্তাভাবনা করছেন নগর আওয়ামী লীগ। শুরুতেই চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করে থানা ইউনিটের সম্মেলন শুরু হবে। ইতোমধ্যে নগর আওয়ামী লীগের নেতারা চকবাজার সম্মেলন করতে প্রস্তুতি সভাও করেছেন।
চকবাজারের প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত হয়ে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ বলেন, ‘জনসম্পৃক্ততা হলো জনকল্যাণমুখী রাজনীতির প্রধান শর্ত। তাই তৃণমূল নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক ইস্যুর বাইরে স্থানীয় ভিত্তিক সমস্যাগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। সমাজে গ্রহণযোগ্য ভালো মানুষকে কাছে টানতে হবে। এতেই অঞ্চলভিত্তিক দলীয় সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত হবে। স্থানীয় নেতৃত্বে তারাই আসবেন যাদের সমাজে গ্রহণযোগ্যতা আছে এবং দল ও দেশের কঠিন সময়ে জনগনের পাশে ছিলেন তারা।’
এদিকে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেয়ার পরপরই নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়েছে। গত ২০জুন নগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর নিজেদের মতামত তুলে ধরলে আবারও দ্ব›দ্ব প্রকাশ্যে আসে।
কমিটি গঠনের পর থেকে সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে থাকলেও নিয়মিত দলীয় সভায় উপস্থিত হননি রেজাউল করিম চৌধুরী। সম্মেলনের সিদ্ধান্ত আসার পর হঠাৎ সাংগঠনিক প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে নড়েচড়ে বসায় সম্মেলন প্রক্রিয়া জটিল হবে বলেই ধারণা করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
নগর আওয়ামী লীগের পদপ্রত্যাশী এক নেতা বলেন, সিটি মেয়র রেজাউল কমির চৌধুরী সক্রিয় হওয়ায় বুঝা যাচ্ছে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেদের মতো করে কমিটি করতে পারবে না। অর্থাৎ কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় তীক্ষ্ণ নজর রাখবেন মেয়র সােেহব। যদিও সাংগঠনিকভাবে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির ভাইয়ের সংগঠনে শক্তিশালী অবস্থান হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, জুলাই মাসে বাকি থাকা ইউনিটের কমপক্ষে ১৫টি ওয়ার্ড, ইউনিট ও থানার সম্মেলন করতে চায় নগর আওয়ামী লীগ। শোকের মাস আগস্টে আওয়ামী লীগ কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকায় এ মাসে কোন ধরনের সম্মেলন হবে না। সেপ্টেম্বরে বাকি ইউনিটের সম্মেলন শেষ করে অক্টোবরেই দলীয় হাইকমাÐের সিদ্ধান্ত অনুসারে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন করতে হবে। এবার নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলে পঞ্চমবারে সম্মেলন সফলতার মুখ দেখবে নগর আওয়ামী লীগ।
২০২২ সালে সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর গত দুই বছরে ১৯১টি ওয়ার্ড, ইউনিট ও থানা ইউনিটের মধ্যে ১২১টি ইউনিটের সম্মেলন হয়েছে। বাকি থাকা ২৭টি ইউনিট, ২৯টি ওয়ার্ড ও ১৪টি থানা ইউনিটের সম্মেলন এখনো বাকি রয়েছে।