চন্দনাইশ দিয়াকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পে পাহাড়ধসের শঙ্কা

4

চন্দনাইশ প্রতিনিধি

চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী দিয়াকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুই পাশে উচু পাহাড় থেকে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে পড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আবাসিক এলাকায়। ফলে পাহাড় ধসের আতংকে রয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিয়াকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পে ২০০১ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ১১০ পরিবারকে ঘর দেয়া হয়েছিল। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এ এলাকার বাসিন্দাদের কেউ খোঁজ খবর নেয়নি বলে জানিয়েছেন তারা। ফলে জরাজীর্ণ ১’শ ১০ ঘর পুনঃসংস্কারের উদ্যোগ নেন উপজেলা প্রশাসন। গত ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ঘরগুলো পুননির্মাণের জন্য পাহাড় কেটে মাটি সমান্তরাল করা হয়। ৪ মাসে নতুনভাবে সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করে পূর্বের ৩০ পরিবার হিন্দুদের সাথে ৩ পরিবার নতুনভাবে এবং ৮০ পরিবার মুসলিমের সাথে নতুনভাবে ১০ পরিবার সংযুক্ত করে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। পাহাড় কাটার কারণে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩ পাশে পাহাড়ের মাটি বৃষ্টি পড়লে ধসে পড়ার আশংখা করছেন বাসিন্দারা। তাছাড়া, আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় কোন ধরনের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ঘরের সামনে দিয়ে পাহাড়ি বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হয়। ফলে আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার সড়কটি ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে গেলে তথা ভরা বৃষ্টির মৌসুমে পানি চলাচল করলে পাহাড় কাটা মাটিগুলো সরে গিয়ে চলাচল ব্যাহত হবে এলাকাবাসীর।
ঘরগুলো পুননির্মাণের কাজ শেষ করে চলতি বছর জানুয়ারিতে উপকারভোগীদের দখল স্বত্ব ঘরের চাবি বুঝিয়ে দেয়া হয়। এপ্রিল মাসে বৃষ্টি শুরু হলে পানির স্রোতে নতুন পাহাড় কাটার নরম মাটি ধসে পড়ে ও নব-নির্মিত চলাচলের রাস্ত ভেঙ্গে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পাহাড় ধসের আশংকা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সে সাথে প্রাণনাশেরও আশংকায় রয়েছেন তারা। এ বিষয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.মাহবুব আলম উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অবহিত করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, পানি চলাচলের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা না থাকায় নির্মিত ঘরগুলোর চারপাশ থেকে মাটি সড়ে যাওয়ায় এই আতঙ্কের প্রধান কারণ। নিজ খরচে অনেকে বস্তা দিয়ে মাটি আটকানোর চেষ্টা করছেন। উপকারভোগীরা প্রকল্পটি দীর্ঘ মেয়াদি স্থায়ীকরণের জন্য পাহাড়ের চারপাশে পানি চলাচলের জন্য ড্রেন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
বিশেষ করে বৃষ্টির সময় পাহাড়ি ঢলের পানি নিজের মতো করে চলাচল করায় যাতায়তের রাস্তা ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা নামলে আতঙ্ক বিরাজ করে এলাকাবাসীর মাঝে। এ প্রকল্প এলাকায় প্রথম পর্যায়ে সাড়ে ৩ গন্ডা জায়গাসহ ঘর দিলেও দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ গন্ডা জায়গার মধ্যে নির্মিত ঘরে সপরিবারে বসবাস করতে হচ্ছে। এতে পার্শ্ববর্তী স্বাবলম্বী পরিবারের রোশানলে পড়তে হয় অসহায় কিছু পরিবারকে। বিষয়টি সম্পর্কে দোহাজারী পৌরসভার মেয়র লোকমান হাকিম বলেছেন, উপজেলা প্রশাসনের প্রকল্প এলাকায় পৌরসভার হস্তক্ষেপ করার নিয়ম ও সুযোগ নেই। নাগরিক সুবিধার কথা বিবেচনা করে নতুন প্রকল্প সৃষ্টি করে এ সংকট সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম বলেছেন, ইতিমধ্যে ড্রেন নির্মাণের জন্য এলজিইডি ও আশ্রয়ণ প্রকল্পে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।