চট্টগ্রামে মৎস্যখাতে ক্ষতি ২৯১ কোটি টাকা

2

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে ১৬ হাজার ৮৬৪টি পুকুর-দিঘী। এতে ভেসে গেছে ১৬ হাজার ৫৯৫ মেট্রিক টন মাছ। এছাড়াও ১৪ লক্ষ মেট্রিক টন মাছের পোনা ভেসে যাওয়া, দুই লক্ষ চিংড়ির পিএলসহ মৎস্য প্রজেক্টের আশেপাশের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে ব্যাপক। সবমিলিয়ে গতকাল রবিবার পর্যন্ত ২৯০ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য অফিস।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসের মৎস্য জরীপ কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, ‘বন্যা ও অতি বৃষ্টিপাতে চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার ১৬২টি ইউনিয়নে মৎস্য সেক্টরে ক্ষতি হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে পুকুর-দিঘী, চিংড়ি ঘের, চিংড়ি পিএল (পোনা) সহ মাছের পোনা। প্রায় ২৮৯ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকার মাছ হারিয়েছেন খামারিরা। এছাড়াও মুহুরী প্রজেক্ট, চিংড়ি ঘেরসহ মৎস্য প্রকল্পের আশেপাশের অবকাঠামো নষ্ট হয়েছে। সবমিলিয়ে বন্যায় ২৯০ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে’।
মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার ১৬ হাজার ৮৬৪টি পুকুর- দিঘী পানিতে ডুবে গেছে। এরমধ্যে বাঁশখালীতে ১৭৬টি, লোহাগাড়ায় ১৪৮টি, সাতকানিয়ায় ৫৪৩টি, চন্দনাইশে ৩০২টি, আনোয়ারায় ৪৫৭টি, পটিয়ায় ১ হাজার ৭৭৩টি, বোয়ালখালীতে ৫৬৮টি, রাঙ্গুনিয়ায় ১ হাজার ৪১৫টি, হাটহাজারীতে ২ হাজার ৬০০টি, রাউজানে ৬৪৮টি, ফটিকছড়িতে ৪ হাজার ১৬টি, সীতাকুন্ডে ৫০০টি, মিরসরাইয়ে ৩ হাজার ৭০০টি, স›দ্বীপে ৮১৪টি, কর্ণফুলীতে ২০৭টি পুকুর-দিঘী ডুবে গেছে। এসব পুকুর-দিঘীর আয়তন ৫৫ হাজার ৫৪১ দশমিক ৬ হেক্টর। এছাড়াও চিংড়ি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২ হেক্টর। ১৬ হাজার ৫৯৫ দশমিক ৮ মেট্টিক টন মাছের ক্ষতি হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ২৮৯ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। ১৪ লাখ মেট্টবক টন মাছের পোনা ক্ষতি হয়েছে। যার মূল্য ৫০ লক্ষ ৮ হাজার টাকা। চার লক্ষ টাকার দুই লক্ষ চিংড়ি পিএল ক্ষতি হয়েছে। ২৮ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার মৎস্য প্রজেক্টের অবকাঠামো ভেঙ্গে গেছে।
বাঁশখালী পৌরসভার চ‚ড়ামনি পাড়ার মৎস্য চাষী অনুপম দাশ বলেন, ‘বাঁশখালীতে বড়ধরনের বন্যা না হলেও অধিক বৃষ্টিপাতে পানি জমে প্রচুর পুকুর ডুবে গেছে। গত ১৭ আগস্ট বৃষ্টিপাতে আমার তিনটি পুকুর ডুবে সব মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ফটিকছড়ির মৎস্য চাষী সাজ্জাদ আহমদ বলেন, আমার একটি বড় পুকুর ও তিনটি ছোট পুকুর পানিতে ডুবে গেছে। মানুষের কাছ থেকে লাগিয়ত নিয়ে মাছ চাষ করছিলাম। এতে আমার আড়াই লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই বন্যায় আমি চরমভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছি।