চট্টগ্রামেও জাতীয় সংগীত গেয়ে প্রতিবাদ

7

পূর্বদেশ ডেস্ক

জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবিকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে একযোগে সেটি গেয়ে প্রতিবাদ জানাল চট্টগ্রামের মানুষ। নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে গতকাল শুক্রবার বিকাল ৫ টায় ‘সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত’ কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ; মাইকে ‘আমার সোনার বাংলা’ বেজে ওঠার সঙ্গে জাতীয় পতাকা হাতে তারা একযোগে কণ্ঠ মেলান। শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিক, সাধারণ শিক্ষার্থী ও দিনমজুর মানুষেরা জাতীয় সংগীত গেয়ে ওঠেন বুকে হাত রেখে। কারও চোখ ছিল ছলছল, আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন কেউ কেউ। খবর বিডিনিউজের
ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতকে ‘স্বাধীনতার অস্তিত্বের পরিপন্থি’ আখ্যা দিয়ে তা পরিবর্তনের দাবি জানান জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়েও। বাহাত্তরের সংবিধান ‘বৈধ নয়’ মন্তব্য করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করারও দাবি জানান সেনাবাহিনীর সাবেক এ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।
এর প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান অনেকে। প্রতিবাদস্বরূপ শুক্রবার সশরীরে সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার কর্মসূচি পালিত হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
চেরাগী পাহাড় চত্বরে উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংসদও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। উদীচীর দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সভাপতি সাংবাদিক জসীম চৌধুরী সবুজ বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীতসহ এদেশের আপামর জনসাধারণের প্রাণের সব বিষয় নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র দেখা যাচ্ছে। একটি ধর্মান্ধ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ছাত্র-জনতার অভ‚তপূর্ব গণঅভ‚্যত্থানের মূল সুরকে বিকৃত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার বিরোধিতা করা থেকে শুরু করে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকার ওপর আঘাত হানতে শুরু করেছে’।
উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক অসীম বিকাশ দাশ, উদীচী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি কবি ইউসুফ মাহমুদ, খেলাঘর সংগঠক মোর্শেদুল আলম, আশীষ ধর, শিল্পকলা অ্যাকাডেমির কার্যকরী কমিটির সদস্য বাপ্পা চৌধুরী, চট্টগ্রাম গ্রুপ থিয়েটার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম কর্মসূচিতে অংশ নেন।