চকরিয়ায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী

2

চকরিয়া প্রতিনিধি

কক্সবাজারের চকরিয়ায় চারদিনের ভারী বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি মাতামুহুরি নদীর বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজলার অন্তত ১৫ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে টানা ভারী বর্ষণের ফলে হারবাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গাইনাকাটা এলাকায় ১৫টি কাঁচা ঘর ধসে পড়েছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। চকরিয়ায় বন্যায় পানিবন্দি লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান করা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাহাড়ী ঢলের পানি মাতামুহুরী নদীর বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের নলবিলা এলাকায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শতাধিক ঘরবাড়ি। বাড়ি ঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় এসব বসতির লোকজন বয়স্ক, শিশু ও তাদের পালিত গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। তবে কাছে থাকা সাইক্লোন শেল্টার ও স্থানীয় লোকজনের বিল্ডিংয়ে অনেককে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানি নিয়ে দুঃচিন্তায় রয়েছেন বন্যা কবলিত লোকজন।
বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.ছালেকুজ্জামান বলেন, বন্যায় তার ইউনিয়নের ডেইংগাকাটা, পহরচাঁদা, রসুলাবাদ, হিন্দুপাড়া ও শান্তির বাজার এলাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ওইসব এলাকায নিজ তহবিল থেকে সাধ্যমত শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিয়দের চেয়ারম্যান মক্কি ইকবাল হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়ন মাতামুহুরী নদী তীরবর্তী হওয়ায় অধিকাংশ ঘরবাড়িতে ঢলের পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে এসব লোকজন চরম বিপাকে পড়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া হারবাং কাকারা, সুরাজপর-মানিকপুর, ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, চিরিংগা ও খুটাখালি ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছ। স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়াও উপকূলীয় বদরখালী, কোনাখালী, পশ্চিম বড় ভেওলা ও ঢেমুশিয়া এলাকার মৎস্যঘের, ধানক্ষেত ও সবজি ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নিস্কাশনের ওইসব এলাকার জলমহালের সুইচগেট গুলো খুলে দেয়া হয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণের জন্য একটি চাহিদাপত্র জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এসব পণ্য হাতে পেলেই বন্যা কবলিত এলাকায় বিতরণ করা হবে।