গৃহকর্মী অধিকার রক্ষা কমিটি চট্টগ্রাম জেলার সমাবেশ ও মিছিল

11

গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া এবং সরকারিভাবে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা ও আর্মি রেটে রেশনিং ব্যবস্থা চালুসহ ৭ দফা দাবীতে গৃহকর্মী অধিকার রক্ষা কমিটি চট্টগ্রাম জেলার উদোগে গতকাল বিকাল ৪টায় ২নং গেইট মোড়ে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
গৃহকর্মী অধিকার রক্ষা কমিটির সভাপতি আসমা আক্তারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, গণ অধিকার চর্চা কেন্দ্রের সদস্য সচিব মশিউর রহমান খান, ইঞ্জিনিয়ার সিঞ্চন ভৌমিক, ছাত্রনেতা এম কাইছার উদ্দীন, গৃহকর্মী অধিকার রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জু আরা বেগম, সদস্য পারুল আক্তার, মুসলিমা, নূপুর বেগম প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন গৃহকর্মী অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য তোফাতুল জান্নাত।
সমাবেশে ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, লক্ষ লক্ষ গৃহকর্মী বাসাবাড়িতে শ্রম দিয়ে জীবিকা অর্জন করেন। অথচ দুঃখজনক হলো,স্বাধীনতার এত বছর পরেও তাদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। অর্থনীতিতে তাদের প্রদত্ত শ্রমের অর্থনৈতিক মূল্য হিসাব করার কোন উদ্যোগ নেই। তাদের শ্রমের কোন সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা হয়নি, অথচ তাদের ছাড়া আমাদের নাগরিক জীবন প্রায় অচল। আশাপ্রদ হচ্ছে, গৃহকর্মীরা তাদের অধিকারের দাবিতে সংগঠিত ও সোচ্চার হয়েছেন। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে এবং জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, প্রায় ৫০ লক্ষ নারী, কিশোরী ও শিশু গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছে। তারা দক্ষতার সাথে কাজ করলেও, শ্রম আইনে গৃহকর্মীদের এখনও শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ফলে গৃহকর্মীরা শ্রম দিলেও তাদের জন্য নেই ন্যূনতম মজুরি, ছুটিসহ আইনী অধিকার। গৃহকর্মীরা কাজ করতে গিয়ে খুন, ধর্ষণ, যৌন হয়রানিসহ শারীরিক-মানসিক নানা নির্যাতনের শিকার হলেও যথাযথ আইনী সহায়তা ও বিচার পায়না। গৃহকর্মীদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠনের অভাবে তারা তাদের উপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের কথা কোথাও বলতে পারে না। তাই আসুন আমরা গৃহকর্মীদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে গৃহকর্মী অধিকার রক্ষা কমিটিকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ হই।
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল ২নং গেট থেকে মুরাদপুর হয়ে ষোলশহর স্টেশনে এসে শেষ হয়।
নেতৃবৃন্দ নিম্নোক্ত দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গৃহশ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান-গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং সরকারিভাবে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করতে হবে, প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে বেতন প্রদান করতে হবে, সাপ্তাহিক ছুটিসহ সকল সরকারি ছুটি দিতে হবে, চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকারকে নিতে হবে। কর্মরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে গৃহকর্তাকে চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে হবে। কাজ থেকে ছাঁটাই করা যাবে না, গৃহকর্মীদের জন্য সরকারি উদ্যোগে বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
সরকারিভাবে পেনশন বা এককালীন তহবিলের ব্যবস্থা করতে হবে, গৃহকর্মীদের নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে, গৃহকর্মীদের উপর সকল প্রকার শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি