গুমাইবিলে আড়াই হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আমনের চাষ

3

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি

চলতি বছরে গুমাই বিলে সোয়া আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে আমনের চাষ লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিলের মাঠ এখন সবুজে ছেয়ে গেছে। যেদিকে চোখ যায়, সবুজ স্বপ্নে ভেসে ওঠে কৃষকের মন। চলতি বছর টানা বৃষ্টি হওয়ায় আমন চাষাবাদে ব্যাপক ক্ষতি হযেছে। ৪ দিন টানা বৃষ্টির পানির নিচে ছিল রোপণকৃত আমন চারা। সাথে আমনের বীজতলাও। পানি নেমে গেলে কৃষকরা আবারো কোমর বেঁধে আমন চারা রোপন করে তাদের জমিতে। গত ১ সপ্তাহ পরিবশে ও প্রকৃতি কৃষকের অনুকূলে থাকায় পুরো গুমাই বিল চারা রোপণের কাজ শেষ করেছে। এ যেন অবাক করার মতো। কৃষকের মনোবল কি পরিমাণ শক্তিশালী হলে হাতে গোণা কযেক দিনে গুমাই বিল আমনের সবুজ চারায় ভওে উঠেছে ।
চারা রোপণের পর প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে এবারে ১৫ হাজার কৃষক ধানের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন। দেশের খাদ্য উৎপাদনে যোগ করবে ৩ দিনের ধান।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলী, মরিয়মনগর, হোসনাবাদ, রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে গুমাই বিল। প্রতিবছরের মতো এ বছরও গুমাই বিলে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে আমনের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতেই উচ্চফলনশীল (উফশী) ব্রি ৯৫, বীনা ১৭, স্বর্ণা ৫, ব্রি ৭১, ব্রি ৭৫, ব্রি ৪৯, ব্রি ৫০, ব্রি ৫২, ব্রি ৭২ ও ব্রি ৮১ জাতের আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১হাজার হেক্টর জমিতে স্থানীয় কালিজিরা, বিন্নি ধান জাতের এবং বাকি ৯০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে হাইব্রিড জাতের আমন ধান। কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে গুমাই বিল থেকে প্রতি হেক্টরে সাড়ে ৫ টন হিসাবে ১৮ হাজার ৯৫ মেট্রিক টন ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।
রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিলের কৃষক নুরুল হক বলেন, এ বছর দুই একর জমিতে আমনের চাষ করেছি। এর মধ্যে নিজের জমি আছে মাত্র ৪০ শতাংশ। বাকি ৬০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেছি। কৃষি অফিসের পরামর্শে উফশী জাতের আমনের চারা রোপণ করি। জমিতে সার থেকে শুরু করে কীটনাশক সবকিছুই ব্যবহার করেছি তাদের পরামর্শে। সবকিছু মিলিয়ে এবার ভালো ফলনের আশা করছি।
চন্দ্রঘোনা আধুরপাড়া গ্রামের কৃষক হাছান আলী ( ৬৫) বলেন, মাঝামাঝি সময়েও বৃষ্টির দেখা মিলছে। আবহাওয়া বেশ ভালো। এ বছর এখানে অতিবৃষ্টি হয়নি, তাই বন্যাও হয়নি। ফলে মাঠ সবুজে ভরে উঠেছে। কোনোরূপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত না করলে এ বছর ভালো ফলন পাব বলে মনে করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ে তদারকি, সময়মতো কীটনাশক প্রয়োগ ও কীট দমনে প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যবহার এবং আবহাওয়া ঠিক থাকলে এবার আমন চাষ গেল বোরো চাষের মতো বাম্পার ফলন হবে।