গরিব মানুষের জন্য কোনো সুখবর নেই

2

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘোষিত বাজেটকে ‘অসম’ উল্লেখ করে এটা বর্তমান সরকারের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটের লক্ষ্যে প্রণীত অর্থ লুটেরাদের বাজেট বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহব্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর ঘোষিত ২০২৪-২৫ বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর ঘোষিত ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত এই বাজেট নজিরবিহীন লুটপাট ও কল্পনার অবাস্তবায়নযোগ্য বাজেট। এই বাজেটে দেশের চরম অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণের কোনো দিকনির্দেশনা নেই। সাধারণ ও গরিব মানুষের জন্য কোনো সুখবর নেই। এটি বাস্তবতা বিবর্জিত, প্রতারণামূলক, লোক দেখানো বাজেট। বাজেটে সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচার প্রতিরোধে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। ক্ষমতার বলয়ের বাইরে সাধারণ মানুষের অনুক‚লে এই বাজেট কোনো ভ‚মিকা রাখবে না। এটা গণবিরোধী বাজেট। ভোটার বিহীন দুর্নীতিবাজ সরকারের এই বাজেটে জনগণের সর্বস্ব লুটের পাকা বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এটা বর্তমান সরকারের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটের লক্ষ্যে প্রণীত অর্থ লুটেরাদের বাজেট। এটা একটা অসম বাজেট। আড়াই লাখ কোটি টাকার এত বড় ঘাটতি বাজেট দিয়ে স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব নয়। যেসব খাত থেকে বাজেট পূরণ করার কথা বলা হচ্ছে, সেটা চ্যালেঞ্জিং। এই বাজেট মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি ও দেশি বিদেশি ঋণের দেনা পরিশোধের চাপে এ বাজেট আর্থিক সংকট, ঋণ নির্ভর ও ঘাটতিসহ বহুমুখী চ্যালেঞ্জের বাজেট। ৭ লাখ ৯৭ কোটি টাকার এই বাজেটে রাজস্ব ও অন্যান্য খাত থেকে মোট আয় ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি ২ লক্ষ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হচ্ছে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ ঋণ এক লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অনুদান চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর বাইরে মূল সমস্যা হচ্ছে আইএমএফ কর্তৃক ঋণ প্রাপ্তির বিভিন্নমুখী চাপ এবং বিভিন্ন দেশি বিদেশি দেনা পরিশোধের চাপ।
শাহাদাত হোসেন বলেন, ঋণ ও ঘাটতিভিত্তিক বড় বাজেট অতীতে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি আগামীতেও সম্ভব হবে না। একটি অনির্বাচিত সরকারের উপর করদাতারা আস্থা রাখে না, যার ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহ প্রয়োজনীয় কর আদায় করতে পারে না। যথেষ্ট রাজস্ব আদায় না হওয়ার কারণে এ বছরের বাজেট হবে আরও বেশি ঋণ ও ঘাটতিনির্ভর। তিনি বলেন, যে বাজেট প্রস্তাব করেছে, তা বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক দুর্নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষার এক বার্ষিক ঘোষণাপত্র মাত্র। এই বাজেট কল্পনাবিলাসী বাজেট। বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে যাওয়া, বেপরোয়া অর্থপাচার, জনগণের কাঁধে রাষ্ট্রীয় ঋণের বোঝা একেবারের জন্যেও স্বীকার করা হয়নি। পরিত্রাণের উপায়ও বলা হয়নি। তেমনিভাবে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে সুশাসন ও ন্যায়বিচারের ধারণাকে।