খুলশীতে ট্রাফিক কনস্টেবলকে মারধর

6

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর খুলশীতে উল্টো রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার পথে বাধা দেয়ায় ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ওই কনস্টেবলকে নাকের হাড় ভেঙে মুখমন্ডলে আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে এক নম্বর সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত প্রাডো পাজেরো জিপের চালককে গাড়িসহ আটক করে পুলিশে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। ঘটনার পরপরই ওই চালককে তার নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিচ্যুত করেছে কর্তৃপক্ষ। ঘটনাকে কেন্দ্র ওই কনস্টেবল বাদি হয়ে খুলশী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
জানা যায়, অভিযুক্ত ওই পাজেরো চালকের নাম রফিকুল আলম। তিনি সাউথ ইস্টার্ন ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড নামক একটি কোম্পানির যানবাহন শাখায় কর্মরত। জব্দকৃত গাড়িটির নম্বর ঢাকা মেট্রো ঘ ১৭-৪৮২৪।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুপুর দেড়টার দিকে একটি প্রাডো পাজেরো জিপ খুলশী ১ নম্বর সড়কে উল্টো দিক থেকে এসে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এসময় কর্তব্যরত কনস্টেবল সোহরাব হোসেন তাকে সিগন্যাল দেন এবং উল্টোপথে আসার বিষয়ে জানতে চান ও গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান। এক পর্যায়ে গাড়ির চালক ওই কনস্টেবলের শার্টের কলার ধরে মুখে ঘুষি মারেন এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। যার ফলে ওই পুলিশ সদস্যের নাকের হাড় ভেঙে অনবরত রক্ত বের হয় ও তার পরিহিত ইউনিফর্ম ছিড়ে যায়। সেই সাথে মুখমন্ডলও আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে উপস্থিত ছাত্র-জনতার সহযোগিতায় চালকসহ গাড়িকে আটক করে খুলশী থানার কর্তব্যরত উপপরিদর্শক (এসআই) রাজীব দে’কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, হামলাকারী ওই পাজেরো চালককে ঘটনার পরপরই চাকরিচ্যুত করেছে ইস্টার্ন ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির মানব সম্পদ ও প্রশাসন শাখার ব্যবস্থাপক মো. মোরশেদ মঈনুদ্দীন এক নোটিশে এ তথ্য জানান। কোম্পানির নিয়মানুযায়ী ছাড়পত্র প্রাপ্তির ভিত্তিতে হিসাব শাখা থেকে যেকোনো কর্মদিবসে ও কর্মসময়ের মধ্যে ওই চালকের সমুদয় পাওনাদি বুঝে নেওয়ার জন্য নির্দেশও প্রদান করা হয়।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবিরুল ইসলাম বলেন, দুপুরে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনের সময় একটি পাজেরো জিপের চালক একজন কনস্টেবলকে মারধর করে রক্তাক্ত করে। এরপর ওই চালককে গাড়িসহ আটক করে থানায় সোপর্দ করে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। এরইমধ্যে অভিযুক্ত চালককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) জয়নুল আবেদীন পূর্বদেশকে বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের পর পুলিশ নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছে, এরই মধ্যে যদি এমন অবস্থা তৈরি হয়, তবে সকলের মনোবল আবার ভেঙে পড়বে। পুলিশ সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে, এরপরও আমাদের উপর বারবার হামলা কেন? এভাবে হামলা হলে পুলিশ কীভাবে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে? এর আগেও বন্দর থানার এক কনস্টেবলকে পুলিশ কিনা জিজ্ঞেস করে বেধড়ক পেটানো হয়। আমরা ট্রমা কাটিয়ে স্বাভাবিকভাবে জনগণকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এই মুহ‚র্তে এ হামলার ঘটনা আমাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক এবং ভীতিকরও বটে।