খাগড়াছড়ি থেকে দুই সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার

4

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম আনার হত্যায় দুই সন্দেহভাজনকে খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে হেলিকপ্টারে ঢাকা নিয়ে এসেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দাদের একটি দল।
গতকাল বুধবার এদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে কলকাতার সেই ফ্লাটে আনার হত্যাকান্ডে ‘সরাসরি অংশ নেওয়া’ সাতজনই গ্রেপ্তার হওয়ার তথ্য দেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ।
গ্রেপ্তার এ দুইজন নাম বদলে হিন্দু পরিচয় নিয়ে খাগড়াছড়ির একটি কালী মন্দিরে ২৩ দিন ধরে অবস্থান করছিলেন বলে জানান তিনি। অভিযানে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- ফয়সাল আলী সাজি ও মোস্তাফিজুর রহমান।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, এরা দুজন আনার হত্যার অন্যতম আসামি শিমুল ভুঁইয়ার সঙ্গে হত্যাকান্ডে অংশ নেন।
এদিন এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে ‘গ্যাস বাবু’কে নিয়ে পুকুরে ফেলে দেওয়া মোবাইল উদ্ধারেও যান ডিবি কর্মকর্তা হারুন। তবে দুই পুকুরে তল্লাশি শেষে কোনো ফোন পাওয়া যায়নি। খবর বিডিনিউজ’র
এদিকে খাগড়াছড়িতে গ্রেপ্তারদের হেলিকপ্টারে করে এদিন সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে রাজধানীতে আনা হয়েছে। তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি পূর্বাচল হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। আসামিদের গামছা দিয়ে চোখ বাঁধা অবস্থায় নামানো হয়।
এরপর সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন সাংবাদিকদের বলেন, শিমুল ভুঁইয়ার সঙ্গে মূল ঘাতক হিসেবে ছিল এই ফয়সাল ও মোস্তাফিজুর। হত্যাকান্ডের পর ১৯ মে বাংলাদেশে এসে শাহীনের সঙ্গে কথা বলে। তাদের দুজনকে মাত্র ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এই টাকা নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ছিলেন।
খাগড়াছড়িতে লুকিয়ে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, তারা যেহেতু খাগড়াছড়ির এলাকাগুলো চেনে একসময় ট্রাক চালক হিসেবে কাজ করেছে সে কারণে তারা সেখানে গিয়ে গা ঢাকা দেন। তারা খাগড়াছড়ির পাতাল কালী মন্দিরে নিজেদের পলাশ রায় ও শিমুল রায় পরিচয় দিয়ে গত ২৩ দিন ধরে অবস্থান করছিলেন।
হারুন বলেন, কোনো সময় খবর পেয়েছি তারা সুন্দরবনে আছে, কোনো সময় খবর পেয়েছি তারা সাগরে গেছে। আমি বলেছিলাম তারা পাতালে থাকুক, সাগরে থাকুক ধরে আনব। আমরা কথা রেখেছি। এরপর আমরা খবর পাই সীতাকুÐ পাহাড়ের আশপাশে তারা আছে। আমাদের একটা টিম যায়। পরে আজ হেলিকপ্টারসহ টিম গিয়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদের ধরে নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, সেখানে তারা নিজেদের পলাশ রায় ও শিমুল রায় নাম বলেছিল। তারা বলেছিল তারা মায়ের (কালীর) ভক্ত, এ কারণে মন্দিরে মন্দিরে থাকে। তারা সেখানেই খেত ও ঘুমাত।
হারুন অর রশীদ বলেন, কলকাতার সঞ্জীভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে আনার হত্যার শিমুল ভুঁইয়ার নেতৃত্বে সাতজন অংশ নেন। সবশেষ এই দুইজনসহ পাঁচজন বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হলেন। তারা হলেন- শিমুল ভুঁইয়া, তানভীর ভুঁইয়া ও সেলেস্টি রহমান এবং সর্বশেষ বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া ফয়সাল ও মোস্তাফিজুর।
এর বাইরে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছেন কসাই জিহাদ হাওলাদার এবং নেপালে ধরা পড়েন সিয়াম। সিয়ামকে পরে ভারতের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর বাইরে শিমুল ভুঁইয়ার জবানবন্দির ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু এবং পরে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
তবে এখনও ধরা পড়েনি ডিবির ভাষ্যমতে এই হত্যাকান্ডের মূল ’মাস্টারমাইন্ড’ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন। এই শাহীন ও আনার পুরনো বন্ধু, শাহীনের ভাই ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র।