খাগড়াছড়িতে পাহাড়ধসে বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত

2

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

টানা ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়িতে বন্যার পাশাপাশি ব্যাপক পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। পাহাড়ি নিন্মাঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে সহস্রাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড় ধস ও বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। খোলা হয়েছে ১০০টি আশ্রয় কেন্দ্র। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙার সাপমারায় ভোর রাতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ মাটি সরিয়ে ৪ ঘণ্টার পর সড়ক যোগাযোগ সচল করে।
এদিকে পাহাড় ধসে খাগড়াছড়ি শহরের শালবাগান, হরিনাথ পাড়া, রসুলপুর ও মেহেদীবাগ এলাকায় বেশ কিছু বাড়ী-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোন ধরনের হতাহত না হলেও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে দীঘিনালার কবাখালী ও মেরং এলাকায় সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় রাঙামাটির সাজেক ও লংগদুর সাথে খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। খাগড়াছড়ি শহরে শালবাগানে পাহাড় ধসে কয়েকটি বাড়ীঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে মাইকিং চলছে। ভোর ৬ টার দিকে জেলা শহরের মুসলিম পাড়ার একাংশ, মিলনপুর, কল্যাণপুর, মেহেদিবাগ, উত্তর ও দক্ষিণ গঞ্জপাড়া, শান্তিনগর ও বাঙ্গালকাটির একাংশ এলাকায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে। লোকজন বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, পৌর এলাকায় ১৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, পুরো জেলায় ১০০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

২০টি গ্রাম পানির নিচে :
খাগড়াছড়িতে চেঙ্গি ও দীঘিনালায় মাইনি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে । গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিন্মাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। খাগড়াছড়িতে সদর ও দীঘিনালায় মিলে ২০টি গ্রাম পানির নিচে। টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলে খরস্্েরাতা মাইনি ও চেঙ্গি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় লোকজন স্থানী য়স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছে। হঠাৎ করে পানি উঠা য়লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়ে। অনেকেই গরু-ছাগল নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছে। শহরের একমাত্র পৌর বাস টার্মিনালটি পানিতে ডুবে যায়। যানবাহন গুলো উচু রাস্তায় আশ্রয় নেয়। আশ্রিতরা সকাল বেলা অনেকেই খাবার খেতে পারেনি। শহরের শব্দ মিয়াপাড়া, মুসলিম পাড়া, গঞ্জপাড়া, গোলাবাড়ি, মেহেদী বাগ, কালাডেবা, খবং পুরিয়াসহ দশটি গ্রাম এখন পানির নিচে। পৌর শহরের আন্ত সড়কগুলো পানিতে ডুবে যায়। এতে লোকজন গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে। পৌর শহরের সবজি বাজার এখন পানির নিচে। এতে প্রায় শতাধিক দোকান পানিতে ডুবে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
একইভাবে দীঘিনালার ১০টি গ্রাম পানির নিচে রয়েছে। এখানকার মেরং বাজারটি পানির নিচে। সাজেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আটকা পরে আছে পর্যটকরা ।