ক্রীড়াক্ষেত্রেও আলোচিত ড. ইউনূস

2

স্পোর্টস ডেস্ক

ছাত্র-জনতার বিজয়ের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। শুরু হয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা। দেশে অর্ন্তর্বতীকালীন সরকার প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। শান্তিতে নোবেলজয়ীর হাত ধরে দেশ বদলে যাবে এমন প্রত্যাশা সকলের। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে সবর্জন সমাদৃত এই গুণী ব্যাক্তি।
তিনি দেশের দায়িত্ব নেওয়ায় ক্রীড়াঙ্গনেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সকল ক্রীড়ামোদীরা। বিশ্বক্রীড়াঙ্গনে ইউনূস দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন বহুবার।
২০১৬ রিও অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষ ধাপে মশাল বহন করেছিলেন ড. ইউনূস। এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) সভায় বক্তব্যও রেখেছিলেন। একই বছরের অর্থাৎ ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তিনি স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনার আমন্ত্রণে ন্যু ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। বার্সেলোনার নিজস্ব ভেন্যু ন্যু ক্যাম্পে ২০০৬ সালের শান্তিতে নোবেল জয়ীকে স্বাগত জানান বার্সার ভাইস প্রেসিডেন্ট জর্ডি কার্দোনার ও পরিচালক ডিডাক লি। তরুণ মানুষদের নিয়ে কাজের জন্য ড. ইউনুসকে অভিনন্দিত করার পাশাপাশি তাকে সামনে পেয়ে সম্মানিত বোধ করার কথা ব্যক্ত করেন বার্সা ভাইস প্রেসিডেন্ট। সেখানে বার্সার একটি জার্সিও উপহার পান ড. ইউনুস।
এরপর ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে (২০২১ সালে অনুষ্ঠিত) ড. ইউনূসকে খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও শান্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ‘লরেল অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত করা হয়। খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও শান্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি দিতে ২০১৬ সালে এই অ্যাওয়ার্ডের প্রবর্তন করা হয়। ড. ইউনূস ছিলেন এই অ্যাওয়ার্ড পাওয়া দ্বিতীয় ব্যক্তি।
চলতি প্যারিস অলিম্পিকে ড. ইউনূসকে আরও বড় সম্মান দেওয়া হয়। ড. ইউনূসের ‘তিন শূন্য’ খ্যাত ‘শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ’কেই এবারের অলিম্পিকের মূল বার্তা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
এর আগে ২০১৭ সালে প্যারিস অলিম্পিকে মূলমন্ত্র কী হবে- সেটা ঠিক করতে ড. ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানায় অলিম্পিক কমিটি। পরবর্তীতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, প্যারিসের মেয়র অ্যান হিদালগোকে নিয়ে গঠিত ‘প্যারিস অলিম্পিক টিম’- এর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তিন সদস্যের এই দলটি লুজানে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কাছে প্যারিস অলিম্পিকের মূলমন্ত্র উপস্থাপন করে।
২০০৬ সালে বাংলাদেশে পা রেখেছিলেন পেলে, ম্যারাডোনার পরবর্তী যুগের ফুটবল মহাতারকা জিনেদিন জিদান। গ্রামীণ ব্যাংকের একটি প্রকল্প উদ্বোধন উপলক্ষে ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী এই তারকাকে বাংলাদেশে এনেছিলেন ড. ইউনূস। এছাড়া ২০২৩ সালে ক্রীড়াজগতে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে আজীবন কৃতিত্ব ও অর্জনের জন্য ওয়ার্ল্ড ফুটবল সামিটের (ডাবিøউএফএস) আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পান মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে ড. ইউনূস একজন পরিচিত এবং সর্বজন স্বীকৃত মুখ। তার হাতে দেশের দায়িত্ব যাওয়ার ফলে বিশ্বক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশের ক্রীড়াঙ্গনও ২০০৬ সালে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদকে সাদরে বরণ করে নেওয়ার অপেক্ষায়।