কোটা ইস্যুতে আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত

9

পূর্বদেশ ডেস্ক

সরকারি চাকরির কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আদালতের নির্দেশ মেনে নিয়ে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আদালত ‘বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত দিয়ে রায় দেবে’ মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষের দুর্ভোগ হয় এমন কর্মসূচি পরিহার করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
গতকাল বুধবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন কাদের। খবর বিডিনিউজের।
কোটার বিরোধিতায় আন্দোলনের মধ্যে গতকাল সব পক্ষকে চার সপ্তাহ স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
কিছু পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, কোটা নিয়ে এখন কোনো কথা বলা যাবে না। হাই কোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে আপিল বিভাগ আবার বিষয়টি শুনবে।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা গতকাল বুধবার সকাল থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক আটকে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা এ কর্মসূচির নাম দিয়েছে ‘বাংলা ব্লকেড’।
অবরোধের কারণে বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক যানজটে নাকাল হচ্ছে রাজধানীবাসী। কিন্তু আন্দোলনকারীরা বলছেন, আইন করে কোটা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত’ তাদের আন্দোলন চলবে। তাদের দাবি, শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে সরকরি চাকরির সব গ্রেডে সকল ধরনের কোটা বাতিল করতে হবে।
কাদের বলেন, কোটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সর্বোচ্চ আদালত। জানা গেছে অগাস্ট মাসে চূড়ান্ত শুনানিতে শিক্ষার্থীদের দাবি সুবিবেচনা করে সিদ্ধান্ত দেবে আদালত। আদালত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে বলেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করব ফিরে যেতে।
তারা আদালতের নির্দেশ মেনে ফিরে গেল কি না তা পর্যবেক্ষণ করে দেখি। না ফিরে গেলে কি করা হবে এখনই এসব বলা সমীচীন হবে না।
সরকার কোটা সংস্কার বিষয়ে নিজেদের অবস্থানে অটল থাকবে জানিয়ে কাদের বলেন, তারা যে বিষয় নিয়ে আন্দোলন করছে, আমরা তো সেই কোটামুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরছি না। আদালতের সিদ্ধান্ত হবে চূড়ান্ত। আশা করি বাস্তবসম্মত রায় দিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে।
সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন নিয়ে কাদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ব্যাপারটা আমাদের যোগোযোগ আছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। অচিরেই সমস্যা সমাধান হবে।
চীন সফর শেষে এক দিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরা নিয়ে ‘ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব কর্মসুচি সম্পূর্ণ হয়েছে। বেইজিং তিনি রাত্রীযাপনের কথা ছিল। কিন্তু তিনি সেখানে না থেকে রাতেই দেশে ফিরে আসবেন।
চার দিনের চীন সফর শেষে আজ দেশে ফেরার কথা ছিল শেখ হাসিনার। তবে তার প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান মঙ্গলবার জানান, বৃহস্পতিবার নয়, বুধবার রাতেই দেশে ফিরবেন সরকারপ্রধান। আর সেজন্য কোনো কর্মসূচি বাদ দিতে হবে না। সব সেরেই তিরি ফিরবেন।
এর কারণ জানতে চাইলে কাদের সাংবাদিকদের বলেন, সায়েমা ওয়াজেদ (প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে) দেশে আছেন। তিনি কিছুটা অসুস্থ। তাই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) রাতেই দেশে ফিরে আসছেন।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে অনেকেই ‘মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।