কোটা আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন দিল ছাত্রদল

4

পূর্বদেশ ডেস্ক

কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে তাতে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। বিএনপির ছাত্রসংগঠনটি বলছে, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের অতি সীমিত সংখ্যক কোটা ছাড়া বাংলাদেশে এই মুহূর্তে আর কোনো কোটার প্রয়োজন নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অবস্থানের কথা তুলে ধরেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে যে কোটা সংস্কার আন্দোলন হয়েছিল, সেই আন্দোলনে আমরা নৈতিক সমর্থন দিয়েছি এবং সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছে। এখন যে আন্দোলন হচ্ছে, সেই আন্দোলনেও আমরা সমর্থন দিচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে কোটা সংস্কারের বিষয়ে যে আন্দোলন করছে, সেটির বিষয়ে একটা চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। বিএনপির পক্ষ থেকে মহাসচিব এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমাদের যে বক্তব্য সেটি হচ্ছে, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের অতি সীমিত সংখ্যক কোটা ছাড়া বাংলাদেশে এই মুহূর্তে আর কোনো কোটার কোনো প্রয়োজন নেই। এটি আমাদের অফিসিয়াল বক্তব্য। চলমান যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীরা করছে এই আন্দোলনের সাথে ছাত্রদল পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করছে এবং একই সাথে আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের রুখে দিয়ে এই আন্দোলন সফল হবে ইনশাল্লাহ।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ১০ থেকে ১২ বছরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদেরকে প্রায় ১২ থেকে ১৩ হাজার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদেরকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেওয়া হয়েছিল। এখন এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাদেরকে দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে যদি নিয়োগ দিতে হয়- তাহলে কোটাকে পুনঃস্থাপিত করতে হবে।
সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আদালতকে ব্যবহার করে খুনি শেখ হাসিনার সরকার কোটাকে আবার বহাল করেছে।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনে যারা রয়েছেন, তাদেরকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আমি বলতে চাই, এই গুম-খুনের সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে এই অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার, তার বিরুদ্ধে আপনারাদেরকে সোচ্চার হতে হবে এবং ভারতের যে অবৈধ হস্তক্ষেপসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের সোচ্চার হউন।
ঢাকা কলেজের যেসকল নেতৃবৃন্দ কোটাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদেরকে বলছি, আপনাদের কলেজের সহপাঠী আতিকুর রহমান রাসেলকে গুম করা হয়েছে, তার সন্ধানেরও দাবি জানাবেন- সেটা আমরা প্রত্যাশা করি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১ জুলাই আজিমপুর এলাকা থেকে ছাত্রদলের ঢাকা কলেজ শাখার সহসভাপতি আতিকুর রহমান রাসেলকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকধারী কয়েকজন। এরপর থেকে তার আর কোনো হদিশ নেই। রাসেলের ‘গুম’ হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, রাসেলের নামে কোনো মামলা নেই, কোনো ওয়ারেন্ট নেই। বিনা কারণে তাকে গুম করা হয়েছে। বারবার আমাদের ভাইদের গুম করা হয়েছে, আজ অবধি আমরা তাদেরকে পাইনি।
আমরা বলতে চাই, গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে আমরা শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। এখন যদি আমাদের ভাইদের এভাবে গুম করা হয়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ছাত্রদল ভীত নয়, ছাত্রদলের একজন নেতা-কর্মীও ভীত নয়ৃ রাসেলের সন্ধানে ছাত্রদল রাজপথে থাকবে, আমরা আমাদের ভাইদের অবশ্যই প্রতিশোধ নেব।
দুই-একদিনের মধ্যে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি : বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, আজকে ১২ দিন যাবত আমাদের সহযোদ্ধা গুম হয়ে আছেন। আমরা অত্যন্ত উৎকণ্ঠা ও আশঙ্কার মধ্যে আছি। আমাদের পাশাপাশি রাসেলের পরিবারও অত্যন্ত উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করছেন। আমরা এই জন্য আতঙ্কিত যে এই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশে যে গুমের রাজত্ব কায়েম করেছিল; আমাদের মনে হচ্ছে সেটা আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে।
বকুল বলেন, আমরা ঘোষণা করতে চাই, অনতিবিলম্বে রাসেলকে আমাদের মাঝে যদি ফিরিয়ে দেওয়া না হয়, তাহলে আগামী ২-১ দিনের মধ্যেই ঢাকাসহ সারাদেশে এর প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করব।