মো. নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই
কাপ্তাইসহ পার্বত্যাঞ্চলে ব্যাপক ভাবে কাজুবাদাম চাষের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। ২০২১ সালে কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কাপ্তাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত¡াবধানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কাজুবাদাম ও কফি চাষ শুরু হয়। ওই বছর উপজেলায় ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে কফি এবং কাজুবাদামের চাষ করা হয়।
কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের কারিগর পাড়া বøকে কাজুবাদামের কয়েকটি বাণিজ্যিক বাগানও সৃজন করা হয়। ওই বাগানে রাইখালী ইউনিয়নের ১০জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে প্রায় ৭ হাজার এম-২৩ জাতের কাজুবাদাম গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল। সৃজিত বাগানে বেশ ভাল ফলনও হয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, রোপনের ৩ বছরের মাথায় প্রায় ৫ হাজার গাছে ফুল আসে। এরমধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার গাছে এবছর ফল আসে। বাগানে পানি সরবরাহের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্প থেকে গাছে পানি দেওয়ার পাইপ লাইনসহ ৪টি সোলার ডিপ ইরিগেশন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। পানির ট্যাংক এবং পাইপ লাইনের মাধ্যমে গাছের গোড়ায় পানি দেয়া হচ্ছে। ফলে কৃষকদের মাঝে কাজুবাদাম নিয়ে বেশ আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। এতে কাপ্তাইয়ে কাজুবাদাম চাষে ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়।
গত কয়েকদিন পূর্বে রাইখালী কারিগর পাড়ার ওই কৃষি বকের বাণিজ্যিক বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, পাহাড় জুড়ে রং-বেরংয়ের কাজু আপেলের সাথে কাজুবাদাম ঝুলে আছে। দৃষ্টিনন্দন এই বাগানের বিভিন্ন অংশ ঘুরে একই চিত্র নজরে আসে। বাগান মালিক কৃষক অংসুই উ মারমা, উসাই মারমা, পাইসুই খই মারমা ও সাজাই প্রæ মারমা জানায়, এত দ্রæত আমরা কাজু বাদামের ফলন পাবো সেটা আশা করিনি। উপজেলা কৃষি বিভাগের নিবিড় তত্ত¡াবধানে এবং আমাদের ধারাবাহিক পরিচর্যায় খুব ভাল ফলনের আশা করছি। আগামী বছর ফলনে ব্যাপক লাভজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছি। বাগানে ফসলের বর্তমান অবস্থায় কৃষকরা বেশ খুশি।
অতি সম্প্রতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান আহমেদ কারিগর পাড়া কাজুবাদাম বাগান পরিদর্শন করেন। বাগান পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, কাজুবাদাম চাষে ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে কাপ্তাইয়ের পাহাড়ি জনপদে। অত্যাধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং উচ্চ মূল্যের ফসল হওয়ায় পাহাড়ের মাটিতে চাষ উপযোগী কাজুবাদাম চাষাবাদ দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চলমান প্রকল্পের আওতায় কৃষক প্রশিক্ষণ এবং প্রদর্শনী স্থাপনের মাধ্যমে কফি ও কাজুবাদাম চাষে কৃষকদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করা হচ্ছে।
