কাউখালীতে স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যা ঘাতক গ্রেপ্তার

4

রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙামাটির কাউখালীতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ও শাশুড়ীকে লোহার শাবল দিয়ে খুঁচিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে স্বামী। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলা সদরের নিকট কাশখালী গ্রামে হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ফাতেমা আক্তার (২৬) ও তার বৃদ্ধ মা আয়েশা খাতুন (৬১)। ঘাতক স্বামী মো. ডবল্লাল হোসেন (৩৫) কে আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী।
কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ রাজীব চন্দ্র কর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, এ ব্যাপারে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে লাশের ময়না তদন্তে জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। স্বামীর হাতে স্ত্রী ও শাশুড়ী খুনের ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, কাউখালী উপজেলার কাশখালী এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের মেয়ে ফাতেমা বেগম (২৬) আক্তারের সাথে মো: বিল­াল হোসেন (৩৫) পিতা- মৃত আনজু মিয়া সাং-বাইরা থানাও উপজেলা মুরাদনগর, জেলা কুমিল্লার সাথে বিগত তিন বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পর ফাতেমা আক্তার শ্বশুর বাড়িতে থাকতো। তাদের সংসারে ২বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। কিন্ত বিয়ের পর থেকে ঘাতক স্বামী মো. বিল্লাল হোসেন স্ত্রী ফাতেমা আক্তারকে শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে গত দুই মাস আগে কাউখালীর কাশখালী এলাকায় মায়ের নিকট চলে যায় ফাতেমা বেগম। বিল্লাল হোসেনের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কুমিল্লা মুরাদনগরে বসবাস করে। মায়ের নিকট চলে যাওয়ার পর গত ২৯ জুলাই সামাজিক ভাবে কাজী অফিসের মাধ্যমে স্বামী বিল্লাল হোসেনকে ডির্ভোস দেয় ফাতেমা। এতেই ক্ষীপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লা থেকে ঘাতক স্বামী বিল্লাল হোসেন কাশখালী এলাকায় শ্বশুর বাড়ীতে আসে। শ্বশুর বাড়ীতে আসলে স্ত্রী এবং শাশুড়ীর সাথে ঝগড়া হয়। ঝগড়া করার পর সে শ্বশুর বাড়ী থেকে বেরিয়ে গিয়ে কোন এক স্থানে ওৎ পেতে থাকে।
শুক্রবার গভীর রাতে বিল্লাল হোসেন গোপনে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তাদের বসত ঘরের পিছনের মাটি খুড়ে ঘরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ফাতেমা আক্তার (২৬) ও বৃদ্ধ শাশুড়ী আয়েশা খাতুন (৬১) কে ঘরে থাকা লোহার শাবল দিয়ে খুঁচিয়ে ও জবাই করে হত্যার পর পালিয়ে যায় ঘাতক। এ সময় ঘরে থাকা শিশু সন্তান মো. বাইতুল্লাহ কান্না করে পাশের বাড়ির রোকেয়া বেগমকে জানালে রোকেয়া বেগম তাৎক্ষণিক ভাবে এলাকার স্থানীয় লোকজনকে সংবাদ দেয়। ঘাতক বিল্লাল হোসেন পালিয়ে যাবার সময় বেতছড়ির পাইন বাগান এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে।
কাউখালী থানার ওসি জানান, ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে নিহত ফাতেমা আক্তারের ভাই মো. ইসমাইল বাদি হয়ে কাউখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। শুক্রবার দুপুরে ঘাতক বিল্লাল হোসেনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।