কল্লোল সুপার মার্কেট ভেঙ্গে ফেলার ষড়যন্ত্র

5

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর মিমি সুপার মার্কেটের নিকটস্থ কল্লোল সুপার মার্কেট বেআইনী ও অবৈধভাবে ভেঙ্গে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেছেন হয়রানি-ভোগান্তি ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হওয়া ভুক্তভোগী কল্লোল সুপার মার্কেট দোকান-মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের অর্ধশত ব্যবসায়ী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কল্লোল সুপার মার্কেট দোকান-মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের অর্থ সম্পাদক খোকন মজুমদার।
ব্যবসায়ীরা বলেন, একজন সাবেক মেয়রের এমন অন্যায়, অনিয়ম, ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। যে কারণে সুবিচার পেতে ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এমন ষড়যন্ত্র, আইনকে অমান্য, নানা অপকর্মের বিষয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানসহ ফায়ার সার্ভিসের প্রধানের সাথে দেখা করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। তারা এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে খোকন মজুমদার জানান, কল্লোল সুপার মার্কেটের মূল মালিক আতিয়া বানু। তিনি ১৯৮৮ সালে সিডিএ থেকে পাঁচতলা বিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করার অনুমতি পান। তবে তাঁর আর্থিক সংগতি না থাকার কারণে বিভিন্ন জনের কাছে নির্মিতব্য দোকান সমূহের পজেশন সালামীর ভিত্তিতে হস্তান্তর করেন এবং ভিন্ন ভিন্ন তারিখে চুক্তিতে আবদ্ধ হন। উক্ত চুক্তিপত্র মূলে কল্লোল সুপার মার্কেট দোকান-মালিক সমবায় সমিতির দোকানদাররা একদিকে দোকানসমূহ নিজেই অলিওয়ারিশান স্থলবর্তী পরবর্তীক্রমে ভোগ দখল বা ব্যবসা বাণিজ্য করার অধিকার আইনানুগভাবে লাভ করেন। অপরদিকে পজেশন অপর যেকোন তৃতীয় পক্ষের বরাবরে হস্তান্তর করার আইনানুগ অধিকার অর্জন করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে আতিয়া বানুর স্বত্ব, দখলের অধিকার বলবার বা থাকবার আইনত ও ন্যায়ত সুযোগ নাই। সম্পত্তির মূল মালিক আতিয়া বানু দোকান মালিকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা সালামী গ্রহণ করেন এবং তিনতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করেন। এতবছর যাবৎ দোকান মালিকদের কাছ থেকে লাখ টাকা সালামী আতিয়া বানুসহ তৎ ওয়ারিশরা নানাভাবে ভোগ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করে ও আইনকে অমান্য করে কল্লোল সুপার মার্কেট বেআইনী ও অবৈধভাবে ভেঙ্গে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন করপোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। বিগত কয়েকবছর ধরে নানাভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন তিনি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি জলাবদ্ধতার উদ্ভট, বানোয়াট অজুহাত দেখিয়ে মার্কেটের পশ্চিম-দক্ষিণ অংশ ভেঙ্গে ফেলার অপচেষ্টা চালায়। অথচ মাহমুদুল ইসলামের কু-উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে তৎকালীন সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন কর্পোরেশনের বুল্ডোজারসহ যাবতীয় সরঞ্জাম সেখান থেকে উঠিয়ে নিয়ে যান। দোকান মালিকরা চট্টগ্রাম তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ৪১৭/২০নং মামলা করলে আদালত মাহমুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারী করেন। যা অদ্যাবধি বলবৎ আছে। এরপরও মাহমুদুল ইসলাম নানাভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসায় দোকান মালিকরা ঘর ভাড়া নিয়ন্ত্রকের আদালত তথা ৫ম সহকারী জজ আদালতে ৪০টি ঘর ভাড়া মামলা দায়ের করেন। এটিও বিচারাধীন আছে।
সংবাদ সম্মেলনে কল্লোল সুপার মার্কেট দোকান-মালিক সমবায় সমিতির উপদেষ্টা মো. সেলিম, সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ মামুন, সহ-সভাপতি সরোয়ার আলম, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মানিক, সহ-সাধারণ সম্পাদক সত্য নারায়ণ ধর ও জহিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহিম, সদস্য শামছুদ্দিন খালেদ, আবদুল হাফিজ জিসান, শাহ মুহাম্মদ এনামুল হকসহ ভুক্তভোগী অর্ধশত ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।